ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একাধিক টিম গত ২৪ ঘন্টায় রাজধানীতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে অজ্ঞান পার্টির ৬৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।
১৭ মে ২০১৯ তারিখ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়।
রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ৩৮ জনকে গ্রেফতার করে সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- ১। মোঃ আঃ ছালাম মীর ২। মোঃ ফালান ৩। মোঃ মনির হোসেন ৪। সাকিব হোসেন ৫। ইকবাল হোসেন ৬। মোঃ আফজাল হোসেন আরিফ ৭। মোঃ মনির হোসেন ৮। মোঃ সানী ৯। মোঃ জুয়েল ১০। মোঃ মিজানুর রহমান ১১। মোঃ শামিম ১২। মোঃ বাদল দেওয়ান ১৩। মোঃ সেলিম ১৪। মোঃ আসিফ উল রিন্টু ১৫। মোঃ শাহ আলম ১৬। মোঃ শাহিন ১৭। মোঃ আব্দুর রহমান ১৮। মোঃ রকিব ১৯। মোঃ টিটু ২০। মোঃ আশ্রাফ ২১। মোঃ রাশেল ২২। মোঃ হোসেন ২৩। মোঃ সেন্টু মন্ডল ২৪। মোঃ রিপন সিকদার ২৫। মোঃ হৃদয় মিয়া ২৬। মোঃ মুন্না ২৭। মোঃ সেন্টু মাঝি ২৮। মোঃ আশ্রাফুল ২৯। মোঃ রেজাউল ৩০। মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন ৩১। মোঃ রবিন আহাম্মেদ রাজ ৩২। মোঃ বাবু ৩৩। মোঃ মাসুদ আলাম ৩৪। মোঃ সাইফুল ইসলাম ৩৫। মোঃ সুমন ৩৬। মোঃ রাজু ৩৭। মোঃ ফজলে রাব্বী ও ৩৮। মোঃ সবুজ।
রাজধানীর ফকিরাপুর ও কুড়িল বিশ্বরোড বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা উত্তর বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- ১। মোঃ শফিকুল ইসলাম ২। মোঃ আলম ৩। মোঃ ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ৪। মোঃ দেলোয়ার হোসেন ৫। মোঃ নূরে আলম ৬। মোঃ শহিদ আলী ৭। মোঃ রুবেল হাওলাদার ৮। মোঃ বাবু আকন্দ ৯। মোঃ আব্দুল মোতালেব ১০। মোঃ রুবেল মিয়া ও ১১। মোঃ রহমত আলী।
ওয়ারী থানাধীন জয়কালি মন্দির নামক এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পূর্ব বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- ১। মোঃ জাহেদ ২। মোঃ রিয়াজ ৩। মোঃ জসিম উদ্দিন ও ৪। মোঃ রুবেল।
গুলিস্তান এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা দক্ষিন বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- ১। মোঃ কাওসার মাহমুদ কিরন ২। মোঃ আজাদ ৩। মোঃ জলিল ফকির ৪। মোঃ মাইনুদ্দিন চিসতি ৫। মোঃ রিপন হোসেন ৬। মোঃ রতন ও ৭। মোঃ অনিক হাসান ওরফে শান্ত।
উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পশ্চিম বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- ১। মোঃ জাকির হোসেন ওরফে ফয়সাল ২। মোঃ মাছুদ রানা ৩। মোঃ মানিক ৪। নুরজাহান ও ৫। শ্রাবনী।
গ্রেফতারের সময় অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের নিকট হতে চেতনা নাশক ট্যাবলেট Noctin (5mg), Nitrazepam (5mg)-১৪৪ পিচ, Lexotanil (3mg)-১৮ পিচ, Epitra (2mg)-১৪৮ পিচ, Sedil- ১০ পিচ, Rivotrl (2mg), Pase (2mg)- ৪০ পিচ, Disopan, Clonazepam (2mg), Nix, Rubbing Balm, Dormicum (7.5 mg)- ২০ পিচ, Milam (7.5 mg)- ৩০ পিচ এর নীল রংয়ের কৌটা, ঔষধ মিশ্রিত জুস, খেজুর, ০৭ টি চোরাই মোবাইলসেট ও ১টি প্রাইভেট কার উদ্ধার করা হয়।
আজ ১৮মে ২০১৯ বেলা ১২টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপি’র গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মোঃ মাহবুব আলম বিপিএম, পিপিএম (বার)।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা জানায়, পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে তারা ঢাকা শহরের বিভিন্ন মার্কেট/শপিংমল, বাসস্ট্যান্ড, সদরঘাট ও রেলস্টেশন এলাকায় আগত ব্যক্তিদের টার্গেট করে সখ্যতা স্থাপন করে। এরপর তাদের অপর সদস্যরা টার্গেটকৃত ব্যক্তি ও তাদের সদস্যকে ট্যাবলেট মিশ্রিত খাদ্যদ্রব্যের আমন্ত্রণ জানায়। টার্গেটকৃত ব্যক্তি রাজী হলে ট্যাবলেট মিশ্রিত খাদ্যদ্রব্য তাকে খাওয়ায় এবং নিজেদের সদস্যরা সাধারণ খাবার গ্রহণ করে। খাদ্য দ্রব্য গ্রহনের পর টার্গেটকৃত ব্যক্তি অচেতন হলে তারা তার মূল্যবান দ্রব্যাদি নিয়ে দ্রুত চলে যায়। এক্ষেত্রে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা খাদ্যদ্রব্য হিসেবে চা, কফি, জুস, ডাবের পানি, পান, ক্রিম জাতীয় বিস্কিট ইত্যাদি ব্যবহার করে।
এছাড়াও তারা অভিনব কৌশল হিসেবে সাধারণ মানুষকে অজ্ঞান করে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে নিকট আত্মীয়-স্বজনের কাছে ফোন করে বলে সে আমাদের নিকট আটক আছে। তাকে মুক্ত করতে বিকাশ বা অন্যকোন মাধ্যমে টাকা পাঠাতে হবে,। আত্মীয়-স্বজন ভিকটিমকে মুক্ত করতে টাকা পাঠালে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা টাকা নিয়ে মোবাইল বন্ধ করে পালিয়ে যায়।
এ সংক্রান্তে গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা রুজু হয়েছে।