টি-টোয়েন্টি ইতিহসে প্রথমবারের মতো দ্বিপক্ষীয় সিরিজে আগামীকাল মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। ভারতের দেরাদুনে অনুষ্ঠিত হবে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ যা আফগানদের হোম সিরিজ। দুই দলেরই লক্ষ্য প্রথম ম্যাচ জিতে সিরিজ শুরু করা। দেরাদুনের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায়।
এই প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করলেও, ছোট ফরম্যাটে ইতোমধ্যে লড়াই করেছে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। তাও আবার মাত্র একবার। ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় ওই ম্যাচে হেসেখেলে জয় পেয়েছিল টাইগাররা। বলারদের নৈপুণ্যে আফগানদের ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারায় মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বাধীন দলটি।
চার বছর আগের সেই আফগানিস্তান, এখন আর আগের চেহারায় নেই। বদলে গেছে আফগান দলের চিত্রপট। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সর্বাধিক উন্নতি করা দল আফগানরা। আইসিসির র্যাংকিং সেটিই প্রমাণ দিচ্ছে। আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশকে পেছনে রেখেছে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটি। বর্তমানে অষ্টম স্থানে রয়েছে আফগানিস্তান, বাংলাদেশের অবস্থান দশম।
প্রথম সিরিজে জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছেন না বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। সিরিজ জয়ই প্রধান টার্গেট- দেশ ছাড়ার আগে এমনই বলেছিলেন তিনি, ‘আমাদের প্রধান টার্গেট সিরিজ জয়। আমরা সিরিজ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদি। চেষ্টা করব ম্যাচ বাই ম্যাচ খেলার। প্রথম ম্যাচটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমরা ভালো শুরু করতে পারি তবে পরের দুই ম্যাচ আমাদের জন্য কাজটা সহজ হবে। আমরা ভালো খেলার সর্বাত্মক চেষ্টা করব এবং সিরিজ জয়ের জন্যই মাঠে নামব।’
দলনেতার মতো একই সুরে কথা বলেন বাংলাদেশের দলের সহ-অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ‘আমি চ্যালেঞ্জটা এভাবে দেখি, আমরা যখন খেলি সেটাই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। কিছুদিন আগেও আমাদের সামনে প্রশ্নবধক একটা চিহ্ন ছিল। এখন সেটা আমাদের সামনে থেকে সরে গেছে। ডে-বাই-ডে আমরা উন্নতি করছি। এই সিরিজটি আমাদের জন্য আরও একটি সুযোগ। এই সিরিজটি জিততে পারলে, পরবর্তী সব সিরিজে আমাদের সুযোগ তৈরি হবে।’
তবে বাংলাদেশ দলের জন্য দুঃসংবাদ বাম পায়ের আঙ্গুলে চোট পেয়ে আসন্ন টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন বাংলাদেশের কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। তার জায়গায় সুযোগ পেয়েছেন আবুল হাসান রাজু। ফিজের না থাকাটা দলের জন্য বড় ক্ষতি বলে মনে করেন সাকিব।
র্যাংকিংয়ের পাশাপাশি শক্তির বিচারেও ছোট ফরম্যাটে কিছুটা এগিয়ে আফগানিস্তান। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য তারুণ্যনির্ভর দল গঠন করেছে তারা। বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন ১৮ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান দারবিশ রসুলি। যুব বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফরমেন্সের কারণেই জাতীয় দলে ডাক পেলেন তিনি। ১৫ মাস পর আবারো দলে ফিরেছেন অফ স্পিনার নজিব তারাকাই। ঘরোয়া আসরে পারফরমেন্সের সুফল পেয়েছেন তিনি।
পাশাপাশি স্পিন বিভাগে রয়েছেন রশিদ খান ও মুজিব-উর রহমান। সদ্যই শেষ হওয়া আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দারাবাদের হয়ে রশিদ ও কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে খেলেন মুজিব। রশিদ ১৭ ম্যাচে ২১ উইকেট এবং মুজিব ১১ ম্যাচে ১৪ উইকেট নেন। তাই রশিদের সাথে মুজিবের স্পিন আক্রমনের বিপক্ষে বড় ধরনের পরীক্ষা দিতে হবে বাংলাদেশকে।
বাংলাদেশ দল : সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মাহমুদুুল্লাহ রিয়াদ (সহ-অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাস, মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, আরিফুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাজমুল ইসলাম অপু, আবুল হাসান রাজু, আবু হায়দার রনি, রুবেল হোসেন ও আবু জায়েদ চৌধুরী রাহী।
আফগানিস্তান দল : আসগর স্টানিকজাই (অধিনায়ক), নজিব তারাকাই, উসমান গনি, মোহাম্মদ শাহজাদ, মুজিব-উর রহমান, নাজিবুল্লাহ জাদরান, সামিউল্লাহ শেনওয়ারি, শাফিকুল্লাহ, দারউইশ রসুলি, মোহাম্মদ নবী, রশিদ খান, গুলবাদিন নাইব, করিম জানাত, শারাফুদ্দিন আশরাফ, শাপুর জাদরান ও আফতাব আলম।