ঢাকার পর চট্টগ্রামের মাটিতেও রংপুর রেঞ্জার্সকে হারালো কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০ ক্রিকেটের চট্টগ্রাম পর্বের দ্বিতীয় দিন ও টুর্নামেন্টের ১১তম ম্যাচে আজ রংপুরকে ৬ উইকেটে হারালো কুমিল্লা।
ঢাকা পর্বে রংপুরকে ১০৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছিলো কুমিল্লা। ওপেনার আফগানিস্তানের মোহাম্মদ শাহজাদের ২৭ বলে ৬১ রানের সুবাদে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৮১ রান করে রংপুর রেঞ্জার্স। জবাবে তিন ব্যাটসম্যানের চল্লিশোর্ধ্ব ইনিংসে জয়ের স্বাদ নেয় কুমিল্লা। ৩ ম্যাচে ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট রয়েছে কুমিল্লার। আর ৩ ম্যাচে এখনো জয়ের দেখা পায়নি রংপুর।
চট্টগ্রাম পর্বে আজ প্রথম খেলতে নামে কুমিল্লা-রংপুর। জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে ব্যাট হাতে শুরুটা দুর্দান্ত করেন শাহজাদ। আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাইমকে নিয়ে ২৬ বলে ৪৯ রান যোগ করেন তিনি। এরমধ্যে মাত্র ৮ রান অবদান ছিলো নাইমের। রান আউট হয়ে ফিরেন তিনি।
তবে ব্যাট হাতে মারমুখী মেজাজে রানের চাকা ঠিকই ঘুড়িয়েছেন শাহজাদ। দ্বিতীয় উইকেটে ইংল্যান্ডের টম আবেলকে নিয়ে ২৩ বলে ৩৭ রান যোগ করেন তিনি। এই জুটিতেই ২১ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন শাহজাদ। এবারের আসরে দ্বিতীয় দ্রুততম হাফ-সেঞ্চুরি এটি।
হাফ-সেঞ্চুরির পর বড় ইনিংস খেলার চেষ্টা করেছেন শাহজাদ। তবে ৬১ রানে থেমে যান তিনি। কুমিল্লার স্পিনার সানজামুল ইসলামের বলে আউট হন এই আফগান। ৭টি চার ও ৪টি ছক্কায় নিজের ইনিংসটি সাজান শাহজাদ।
দলীয় ৮৬ ও নবম ওভারের প্রথম বলে শাহজাদের বিদায়ের পর দলের হয়ে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা। তবে তাদের ছোট-ছোট ইনিংসের কল্যাণে বড় সংগ্রহই পায় রংপুর। আবেল ২৫ বলে ২৫, অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী ২০ বলে ২৬, ইংল্যান্ডের লুইস গ্রেগোরি ১২ বলে ২১, নাদিফ চৌধুরি ১১ বলে ১৫ ও আরাফাত সানি ১০ বলে অপরাজিত ১৫ রান করেন। এতে ৮ উইকেটে ১৮১ রানের বড় সংগ্রহ পায় রংপুর। কুমিল্লার পক্ষে বল হাতে ২৫ রানে ২ উইকেট নেন আফগানিস্তানের স্পিনার মুজিব উর রহমান।
জয়ের জন্য ১৮২ রানের বড় টার্গেটে উড়ন্ত সূচনাই পায় কুমিল্লা। দুই ওপেনার শ্রীলংকার ভানুকা রাজাপাকসে ও সৌম্য সরকার পাওয়ার প্লে’তে যোগ করেন ৬১ রান। দু’শ উপর স্ট্রাইক রেট রাখা রাজাপাকসে ব্যাট করেছেন বিধ্বংসী মেজাজে। উদ্বোধনী জুটিতে ১৫ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩২ রান করেন তিনি। রংপুরের অধিনায়ক নবীর বলে বিদায় ঘটে রাজাপাকসের।
সতীর্থকে হারালেও, তিন নম্বরে নামা সাব্বির রহমানকে নিয়ে রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন সৌম্য। তবে সেটির গতি ছিলো মন্থর। তাই দলের আস্কিং রেটও বেড়ে যায়। তবে ১২তম ওভারের প্রথম বলে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন সৌম্য। এবারে আসরে প্রথমবারের মত খেলতে নামা ১৯ বছর বয়সী পেসার মুকিদুল ইসলাম বিদায় দেন সৌম্যকে। দ্বিতীয় উইকেটে সৌম্য-সাব্বির ৩২ বলে ২৯ রান দেন দলকে।
রান তোলার গতি কম দেখে পরের জুটিতে মারমুখী রূপ নেন সাব্বির ও ইংল্যান্ডের ডেভিড মালান। মাত্র ৩৫ বল মোকাবেলা করে ৫৬ রান যোগ করেন দলকে লড়াইয়ে ফেরান সাব্বির ও মালান। হাফ-সেঞ্চুরির দোড়গোড়ায় দাঁড়িয়ে উইকেট পতনের তালিকায় নাম তুলেছেন সাব্বির। ৪০ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৯ রান করেন সাব্বির।
দলীয় ১৪৬ রানে সাব্বির যখন ফিরেন তখন কুমিল্লার জিততে লাগে ১৯ বলে ৩৬ রান। তাই দলের প্রয়োজন মেটাতে রংপুরের বোলারদের উপর চড়াও হন মালান। সাথে সঙ্গী ছিলেন অধিনায়ক শানাকা। প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে রানের খাতা খুলেন শানাকা। এরপর বাকী পথ পেরিয়ে যাবার কাজটা সাড়েন মালান। ৭ বলে ১২ রান করে শানাকা থামলেও, ২ বল বাকী থাকতে মালানের হাত ধরেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় কুমিল্লা। ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ২৪ বলে ৪২ রান করেন মালান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
রংপুর রেঞ্জার্স : ১৮১/৮, ২০ ওভার (শাহজাদ ৬১, নবী ২৬, মুজিব ২/২৫)।
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স : ১৮২/৪, ১৯.৪ ওভার (সাব্বির ৪৯, মালান ৪২*, আবেল ১/২১)।
ফল : কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : ডেভিড মালান (কুমিল্লা)।