ডিএমপি নিউজ: চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কোতয়ালী থানা ‘আশা জাগানিয়া’ উদ্যোগ গ্রহন করেছে, যা সাড়া ফেলেছে কোতয়ালী থানাসহ আশ-পাশ মানুষের মধ্যে। প্রথমবারের মতো দেশের কোনো থানায় সেবা ছাউনি, দেওয়াল চিত্র অঙ্কন, বিভিন্ন মনীষীর বাণী সম্বলিত চিত্রপট, অফিসার্স কর্নার ইত্যাদি দেখতে সাধারণ মানুষ রীতিমত ভিড় করছেন সিএমপির কোতোয়ালী থানায়।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানায় নবনির্মিত এই ‘সেবা ছাউনি’র উদ্বোধন করেন সিএমপি কমিশনার মোঃ মাহবুবুর রহমান। পাশাপাশি তিনি উদ্বোধন করেন থানা থেকে উর্ধ্বতন পর্যায়ে ‘দৈনিক অপরাধ প্রতিবেদন’ পাঠানোর জন্য একটি ডিজিটাল অ্যাপস ‘অফিসার্স কর্নার’ এর।
সম্প্রতি কোতোয়ালী থানা ভবনকে ভিন্নরূপ এনে দিয়েছেন কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহসীনের কমকান্ড।
ডিএমপি নিউজের সাথে আলাপকালে ওসি মহসীন বলেন, থানা প্রাঙ্গণে নির্মাণ করা হয়েছে সেবা ছাউনি যেখানে পর্যায়ক্রমে একজন কর্মকর্তা দায়িত্বপালন করছেন। শুনছেন সাধারণের নানান অভিযোগ। ওই যাত্রী ছাউনিতে রাখা হয়েছে ফাস্ট এইড বক্স। দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের আগে যেখানে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে এসে আইনি সেবা প্রদান করা হতো এখন সেখানেই প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তার অভিযোগ শুনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুরনো ভবনের বিভিন্ন স্থান সংস্কার করা হয়েছে। থানার চারপাশ পরিচ্ছন্ন করে করা হয়েছে মনোরম বাগান।
থানার ভেতর ও বাইরে দেওয়ালে লাগানো হয়েছে ৫৯টি শিল্পকর্ম। মনীষীদের বিভিন্ন উক্তি, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ উঠে এসেছে এই শিল্পকর্মে। এছাড়াও আছে জঙ্গিবাদ, মাদক, ধর্ষণ, যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে সচেতনতা বিভিন্ন দেওয়াল লিখন। আধুনিকায়ন করা হয়েছে থানার দ্বিতীয় তলায় উপ পরিদর্শকদের কক্ষটিও।
এসব সৃজনশীল কর্মকান্ড দেখতে থানায় প্রতিদিন ভিড় করছেন আশপাশের বাসিন্দাসহ উৎসুক জনতা।
পুলিশের নানা সংকটের মাঝেও কোতোয়ালী থানার ওসির এই কর্মকাণ্ড আশা জাগানিয়া বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার মো. মাহবুবর রহমান। একই সাথে সিএমপির সব ইউনিটে, সব থানায় কোতোয়ালীর মতো পরিবেশ তৈরি করতে চান বলেও জানান তিনি।
মানুষকে সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে ঘাটতির কথা তুলে ধরে নগর পুলিশের এ অভিভাবক বলেন, ‘মানুষকে সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের যে কর্মকাণ্ড, সেখানে আমরা এখনো কাঙ্খিত লেভেলে পৌঁছাতে পারিনি। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আমাদের কর্মকাণ্ড যেমন কঠোর, এদিকে থানায় আসা মানুষদের ওপর আমরা তেমন নরম এবং কোমল হতে পারি না। আমরা সেভাবে মনযোগ দিতে পারি না। এটা আমাদের ব্যর্থতা। আবার এই ব্যর্থতার জন্য আমাদের যুক্তিও আছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের থানাগুলোতে সঠিক পরিবেশ নেই। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হলো জনবল। ঘটনা ঘটার পাঁচ মিনিটের মধ্যে পুলিশ পৌঁছাবে এটা যেমন জনগণের প্রত্যাশা, তেমনি আমাদেরও প্রত্যাশা থাকে, আমরা কত তাড়াতাড়ি পৌঁছাব। কিন্তু আমাদের যানবাহন নেই, সেজন্য দ্রুত পৌঁছতে পারি না সবসময়।