১৫ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সোমবার কিশোরগঞ্জ ইকোনমিক জোনকে প্রিকোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে।
সকালে স্থানীয় প্যান প্যাসিফিক সোনারগাও হোটেলে এক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে কিশোরগঞ্জ ইকোনোমিক জোনের চেয়ারম্যান আব্দুল মাতলুব আহ্মাদে হাতে লাইসেন্স তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ। কিশোরগঞ্জ ইকোনমিক জোন বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ি প্রতিষ্ঠান নিটল-নিলয় গ্রুপের একটি উদ্যোগ যা ভৈরব-কিশোরগঞ্জ মহাসড়ক সংলগ্ন পাকুন্দিয়া উপজেলায় ৯১.৬৩ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। কিশোরগঞ্জ ইকোনমিক জোন দেশের সার্বিক আর্থসামাজিক উন্নয়ন তথা শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও জিডিপি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে বেজা মনে করে।
এই ইকোনমিক জোনের সাথে বিদ্যুত ও গ্যাস সংযোগ রয়েছে, যা ইকোনমিক জোন থেকে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের সরবরাহ করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পানি শোধনাগার প্ল্যান্ট, বর্জ্য পরিশোধনাগার প্ল্যান্ট, অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থাসহ সকল পরিবেশ বান্ধব ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়াও এই জোনটি ভৈরব-কিশোরগঞ্জ রেল লাইনের গোচিহাটা রেল স্টেশনের সাথে নিজস্ব লাইন দ্বারা সংযুক্ত আছে।প্রস্তাবিত শিল্পখাতসমূহের মধ্যে গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল, তথ্য প্রযুক্তি ও টেলি-যোগাযোগ, লেদার ও ফুটওয়ার, এগ্রোবেইজড ফুড এন্ড বেভারেজ, র্মাসিউটিক্যাল, অটোমোবাইলস্, স্টিল, ইলেকট্রনিক্স, আইটি, ফার্নিচার, পাওয়ার প্ল্যান্ট ইত্যাদি এবং রপ্তানী জাতীয় শিল্প খাত রয়েছে। বানিজ্যিক উৎপাদনের ১ম বছরে দক্ষ-অদক্ষ, নারী-পুরুষ মিলিয়ে মোট ২,০০০ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে যা পরবর্তী ৫ বছরের মধ্যে প্রায় ১৫,০০০ অধিক হবে বলে আশা করা যায়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ ইকোনমিক জোন ও নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল মাতলুব আহ্মাদ। লাইসেন্স প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) পবন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আবুল কালাম আজাদ প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স পাওয়ায় কিশোরগঞ্জ ইকোনমিক জোন কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, কিশোরগঞ্জ ইকোনমিক জোনের উদ্দ্যোক্তাগণ তাদের পূর্ব ব্যবসার সুনাম অক্ষুন্ন রেখে ইকোনমিক জোন সফলভাবে বাস্তবায়নের সক্ষম হবে এবং শিল্পে অবহেলিত হাওরাঞ্চলে তথা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরত্বপূর্ন ভুমিকা রাখবে।
সভাপতির বক্তব্যে পবন চৌধুরী বলেন, উন্নয়নে পিছিয়ে থাকা কিশোরগঞ্জ জেলায় এই ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠার ফলে উন্নয়নের মুল শ্রোতে আসতে সহযোগি ভুমিকা পালন করবে। কিশোরগঞ্জ ইকোনমিক জোন হাওরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার ভৈরবের নিকটে অবস্থিত হওয়ায় সহজে বিনেয়োগ আকর্ষনে ও বিপুল সংখ্যক লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত¦রান্বিত করা, ১৫ বছরের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, ১ কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি বছর অতিরিক্ত ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় এবং ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রত্যাশা নিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বেজা ইতোমধ্যে ১৫টি প্রাইভেট অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করার লক্ষে প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স প্রদান করেছে এর মধ্যে ০৪ টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলকে চুড়ান্ত লাইসেন্স প্রদান করেছে (মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চল, আব্দুল মোনেম অর্থনৈতিক অঞ্চল, আমান অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বে অর্থনৈতিক অঞ্চল)।
এছাড়া মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চলে’র ডেভলপার নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে ও মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল (প্রথম পর্যায়) ডেভলপার নিয়োগের জন্য নির্বাচিত ডেভলপারকে লেটার অব এওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে এবং নাফ ট্যুরিজম পার্ক উন্নয়নে ডেভলপার নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এখানে আরোও উল্লেখ্য যে, মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল ২ এ ও ২বি এবং শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল এর প্লট বরাদ্দের কাজ চলমান রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার কিশোরগঞ্জ ইকোনমিক জোনকে প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স প্রদান করা হয় ।