ইজতেমা দ্বারা শুধুমাত্র বড় একটা সম্মেলন করা উদ্দেশ্য নয় বরং সবাই যেন ইজতেমার পূর্ণ সময় শেখা শেখানো, ইবাদত এবং খেদমতের মধ্যে অতিবাহিত করেন, এটাই হচ্ছে উদ্দেশ্যে ।
ইজতেমা থেকে আমরা আমল শিখে যাব। যেন আমাদের মুআমালা (আচরণ), মুআশারাত (লেনদন) ঠিক হয়ে যায়।
এই মজমার জায়গা খুবই ছোট। তাই মোহাব্বতের সঙ্গে একে অপরকে সহযোগিতা করব। একজন অপরজনকে প্রাধান্য দিব। সাহাবায়ে কেরাম রাযিয়াল্লাহু আনহুম জিহাদের ময়দানেও অপর ভাইকে প্রাধান্য দিতেন। নিজে কষ্ট সহ্য করতেন। অপর ভাইকে আরামে থাকার ব্যবস্থা করে দিতেন।
দোস্ত বুজুর্গ, অনেকেই বলেছেন, জায়গার সংকুলান না হওয়ার কারণে অনেক সাথী ভাই অপর সাথীর সঙ্গে ঝগড়াবিবাদে জড়াচ্ছেন।
ভাই, এই মেহনত করে যদি আমার আমল ঠিক না হয়, কথা সুন্দর না হয়, সহনশীলতা না আসে, অপর সাথীর খেদমতের মানসিকতা না আসে, তাহলে আমার দাওয়াতের মাধ্যমে অপর ভাইয়ের মধ্যে প্রভাব পড়বে না। আমার মেহনত দ্বারা কেউ উপকৃত হবে না।
দোস্ত বুজুর্গ, অনুকূল পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নেয়া খুব সহজ। কিন্তু প্রতিকূল অবস্থায় নিজেকে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেয়া কঠিন।
জায়গার সংকুলান না হওয়া, এটা আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য একটি পরীক্ষা। আমরা সাথী ভাইয়ের সঙ্গে ঝগড়া না করে তাকেও একটু থাকার ব্যবস্থা করে দেই। আল্লাহ তাআলার ওপর ভরসা করি।
আমরা যদি আল্লাহ তাআলার ওপরে পূর্ণ ভরসা করে আগত ভাইদের সাথে ইসারের মুআমালা করি(অন্যকে প্রাধান্য দেই) তাহলে ইনশাআল্লাহ সবার জায়গার ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
আল্লাহ তাআলা একজনের খাবারের মাধ্যমে ১০০ জনের খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। আল্লাহ তাআলা আমাদের জায়গার মধ্যেও বরকত দিবেন। আল্লাহ তাআলা যদি চান, তাহলে এই সল্প জায়গাতেও দশ লক্ষ মানুষের জায়গা হওয়া সম্ভব না ভাই? সম্ভব। আমরা আল্লাহ তাআলার প্রতি মুতাওয়াজ্জুহ হই।
এক পাপী লোক, যে কিনা ১০০ মানুষকে নিজ হাতে হত্যা করেছিল। একপর্যায়ে তার অনুসূচনা হলে তওবা করার জন্য বের হল। পথিমধ্যে তার মৃত্যুর সময় এসে গেল। রহমত ও আজাবের ফেরেশতারা উপস্থিত হয়ে গেলেন। ফেরেশতাদের মধ্যে বিতর্ক শুরু হয়ে গেল, কারা তার রুহ নিয়ে আসমানে গমন করবে!
আল্লাহ তাআলা জমীনকে হুকুম করলেন, সে যেদিক থেকে এসেছে, সেই জায়গার দূরত্ব দীর্ঘ হয়ে যাওয়ার জন্য, আর যেই দিকে তওবার জন্য যাচ্ছিল, সেই দিকের পথের দূরত্ব সংক্ষিপ্ত হয়ে যাওয়ার জন্য। ভাই, জমীনকে এই ছোট বড় কে করলেন, ভাই?
আল্লাহ তাআলাই করেছেন। ইনশাআল্লাহ, আল্লাহ তাআলা আমাদের মজমার জায়গাকেও প্রশস্ত করে দিবেন।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে আমল করার তাওফিক দান করুন।
মূল বয়ান: মাওলানা রবিউল হক
শ্রুতিলিখন, মুহাম্মদ বিন ওয়াহিদ
তথ্য সূত্র: যুগান্তর।