ইরাকের রাজধানী বাগদাদ ও পশ্চিমাঞ্চলীয় একটি নগরীতে তিনটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ৪২ জন নিহত হয়েছে। ইফতার ও বয়স্কদের পেনশন তোলার সময় হামলাগুলো চালানো হয়। মঙ্গলবার দেশটির কর্মকর্তারা একথা জানান।
ইসলামিক স্টেটের সাবেক ঘাঁটি মসুলে জিহাদি গোষ্ঠীটির দখলকৃত সর্বশেষ এলাকাগুলো পুনর্নিয়ন্ত্রণের জন্য ইরাকি বাহিনীর অভিযানের প্রেক্ষাপটে এ হামলাগুলো চালানো হয়। পবিত্র রমজান মাসে বাগদাদের একটি আইসক্রিম শপে প্রথম আত্মঘাতী গাড়ি বোমা হামলা চালানো হয়। আইএস এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
এদিকে দেশটির প্রধান পেনশন অফিসে দ্বিতীয় হামলাটি চালায় আইএস। এছাড়া বাগদাদ থেকে প্রায় ১শ’ ২০ মাইল পশ্চিমের একটি সেনা চেকপয়েন্টে তৃতীয় বোমা হামলা চালানো হয়।
রাজধানীর মধ্যাঞ্চলীয় কারাদা এলাকার জনপ্রিয় আইসক্রিম পার্লার আল-ফাকমার কাছের একটি কফি শপে ২২ বছর বয়সী হায়দার হুসেন তার বন্ধুদের সঙ্গে বসে ছিলেন। তিনি বলেন, পুলিশের একজন ক্যাপ্টেন একটি সাদা রঙের ছোট পিকআপ ট্রাককে ওই এলাকায় ঢুকতে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু চালক তার বাধা উপেক্ষা করে সেখানে ঢুকে ট্রাকের বিস্ফোরণ ঘটায়। বিস্ফোরণে কফিশপটিতে আগুন ধরে যায় এবং ভবনটির ধ্বংসাবশেষ আশপাশে ছিটকে পড়ে। বিস্ফোরণের ধাক্কায় হুসেন মাটিতে পড়ে হাত-পায়ে আঘাত পান। এই হামলায় অন্তত ১৬ জন নিহত ও ৭৫ জন আহত হয়েছে।
হুসেন বলেন, ‘অনেক মানুষ মাটিতে পড়ে ছিল। এদের মধ্যে নারী ও শিশুও ছিল। এ সময় নারী ও শিশুরা উচ্চস্বরে চিৎকার করছিল।’ হুসেনের ২২ বছর বয়সী বন্ধু কারার এই বিস্ফোরণে নিহত হয়। তার দুই স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে।
বাগদাদ অপারেশন কমান্ড জানায়, ইরাকের প্রধান পেনশন অফিসের কাছে দ্বিতীয় আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়। হামলাকারী সেখানে একটি বিস্ফোরকভর্তি গাড়ির বিস্ফোরণ ঘটায়। অফিসটি টাইগ্রিস নদীর ওপর অবস্থিত একটি বড় সেতুর কাছে অবস্থিত। কর্মকর্তারা জানান, এই বিস্ফোরণে অন্তত ১১ জন নিহত ও ৪০ জন আহত হয়েছে।
আনবার প্রদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র আনাস আল-আনি বলেন, চেকপয়েন্টে অপর বোমা হামলায় ১৫ জন নিহত ও অপর ২৩ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে চার সেনা ও এক সাংবাদিক রয়েছে। ইরাকের এসিয়াস্যাট টিভি জানিয়েছে, তাদের সাংবাদিক সোহাইব আল-হিতি এই হামলায় নিহত হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন গোষ্ঠী বা সংগঠন এ হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেনি।