মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু জানিয়েছেন, ইলিশ-আহরণে বাংলাদেশ বিশ্বে সর্বশীর্ষে। সারাবিশ্বের উৎপাদিত মোট ইলিশের প্রায় ৮০ শতাংশ আহরিত হয় এদেশের নদ-নদী, মোহনা ও সাগর থেকে।
তিনি জানান, ‘বিগত দশ বছরে ইলিশ উৎপাদনের গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। ৬ লাখ লোক ইলিশ-আহরণে সরাসরি নিয়োজিত এবং ২০ থেকে ২৫ লাখ লোক ইলিশ পরিবহন, বিক্রয়, জাল ও নৌকা তৈরি, বরফ-উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, রপ্তানি ইত্যাদি কাজে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত।
আগামী ৯ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২২দিন মা-ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ উপলক্ষে আজ এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা জানান।
খসরু বলেন, বাংলাদেশে মোট উৎপাদিত মাছের প্রায় ১২ শতাংশ আসে শুধু ইলিশ থেকে, যা একক প্রজাতি হিসেবে সর্বোচ্চ। জিডিপিতে এর অবদান শতকরা ১ ভাগ।
তিনি মাছের উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতার্জনসহ ইলিশের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপের বর্ণনা দিয়ে বলেন, সম্প্রতি পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেড মার্কস অধিদপ্তর দেশের জাতীয় মাছ ইলিশের ভৌগলিক নির্দেশক নিবন্ধন প্রদান করেছে।
তিনি বলেন, পৃথিবীর প্রায় দুই তৃতীয়াংশের অধিক ইলিশ উৎপাদনকারী হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বে পরিচিত। তাই ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও ত্বরান্বিত করতে চলতি বছর ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে অর্থাৎ ৯ অক্টোবর হতে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত সারাদেশে মোট ২২দিন ইলিশ-আহরণ, পরিবহণ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও মজুত নিষিদ্ধ করে ইতোমধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে এবং ‘ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০১৯’ এর আওতায় উপকূলীয় ইলিশ প্রজনন ক্ষেত্রের অন্তর্গত ৭ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাসহ দেশব্যাপী ইলিশ-আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও বিনিময় নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রতিমন্ত্রী জানান, চলতি বছর ইতোমধ্যে মা-ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ হবার পূর্বেই দেশের ইলিশসমৃদ্ধ ৩৫ জেলার ১৪৭ উপজেলায় মোট ৪ লাখ ৮ হাজার ৩২৯টি জেলে পরিবারকে ২০ কেজি হারে মোট ৮ হাজার ১৬৭ মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ-আহরণ এবং জাটকা ধরা নিষিদ্ধকালীন জাটকা ও ইলিশ সমৃদ্ধ এলাকার জেলেদের জন্য প্রতিবছর পরিবার প্রতি ৪০ কেজি হারে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। জাটকা ধরা নিষিদ্ধকালীন ৮ মাস দেশের ১৭ জেলার ৮৫টি উপজেলায় জাটকা-আহরণে বিরত মোট ২ লাখ ৪৮ হাজার ৬৭৪টি জেলে পরিবারে ৪০ কেজি হারে ৪ মাসের জন্য প্রায় ৩৯ হাজার ৭৮৮ মেট্রিক টন ভিজিএফ খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এবছরই প্রথমবারের মতো সামুদ্রিক জলসীমায় ৬৫দিনের মৎস্য-আহরণ নিষিদ্ধকালে উপকূলীয় ৪ লাখ ১৪ হাজার ৭৮৪টি জেলে পরিবারকে মোট ৩৫ হাজার ৯৪৮ মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।-বাসস