ভ্যাট আইন-১৯৯১ এর আওতায় বর্তমানে ৮ লাখ নিবন্ধন রয়েছে। এই ভ্যাট আইন এখন কার্যকর থাকলেও অনলাইন ব্যবস্থাপনায় রিটার্ন দাখিলসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সম্পন্ন করতে এসব বিআইএনসমূহ বাতিল করা হবে। পুরনো এসব বিআইএন বাতিল হওয়ার আগ পর্যন্ত পুনঃনিবন্ধনের সুযোগ থাকছে।
গত ১৫ মার্চ থেকে অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন শুরু হয়। অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধনের পুরো কার্যক্রম দেখভাল করছে ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প।
এ বিষয়ে ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও এনবিআর সদস্য (কাস্টমস্ ও ভ্যাট প্রশাসন) মো. রেজাউল হাসান বলেন, সম্পূর্ণ হয়রানিমুক্ত পরিবেশে ব্যবসায়ীরা যাতে সহজ পদ্ধতিতে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন, এজন্য অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে। এতে পুনঃনিবন্ধনের পাশাপাশি নতুন নিবন্ধন নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা।
তিনি বলেন, নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন ২ বছর পিছিয়ে গেলেও ব্যবসা পরিচালনার জন্য পুরনো বিআইএন বাতিল করা হবে। এজন্য ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানসমূহকে নতুন করে ই-বিআইএন নিতে হবে। তিনি বলেন, গত ৩০ জুন পর্যন্ত ই-বিআইএন পুনঃনিবন্ধনের যে সুযোগ ছিল, সেটা বাড়ানো হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়সূচি চূড়ান্ত না করলেও চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের মধ্যে আমরা পুরনো বিআইএন বাতিল করতে চাই। সেক্ষেত্রে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের জন্য ই-বিআইএন থাকাটা বাধ্যতামূলক।
এনবিআরের এই কর্মকর্তা জানান, ৩০ জুন পর্যন্ত পর্যন্ত ৪০ হাজার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ই-বিআইএন নম্বর গ্রহণ করেছে। এই প্রতিষ্ঠানসমূহের কাছ থেকে মোট ভ্যাট রাজস্ব আয়ের ৯০ শতাংশেরও বেশি পাওয়া যায় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, যেহেতু আমরা ইতোমধ্যে অনলাইন অবকাঠামো তৈরি করেছি, সুতরাং রিটার্ন দাখিলসহ আরো কিছু কার্যক্রম অনলাইনে পরিচালনা করতে পারি। এছাড়া ই-বিআইএন বাধ্যতামূলক হলে দেশে মোট ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত সংখ্যা নিরুপন করাও সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, হয়রানি ও ঝামেলামুক্ত পরিবেশে ব্যবসায় কার্যক্রম আরো সহজভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্য এনবিআর ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের জন্য গত ১৫ মার্চ থেকে অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন ব্যবস্থা চালু করে। নতুন ভ্যাট আইনের আওতায় ৯ ডিজিটের নতুন ই-বিআইএন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়। শেষ পর্যায়ে জনস্বার্থের কথা বিবেচনায় জাতীয় সংসদ নতুন এই আইন বাস্তবায়ন ২ বছরের জন্য পিছিয়ে চলতি অর্থবছরের বাজেট পাস করে।
এনবিআর এখন বলছে, নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন পেছালেও অনলাইন ব্যবস্থাপনা কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোন বাঁধা নেই। তাই ঝামেলামূক্ত পরিবেশে ব্যবসা পরিচালনার সুবিধার্তে ই-বিআইএন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
যেসব প্রতিষ্ঠান এখনও নিবন্ধন বা পুনঃনিবন্ধন করেনি, তাদেরকে দ্রুত নিবন্ধন নেওয়ার আহবান জানান রেজাউল হাসান।
উল্লেখ্য, সনাতনী পদ্ধতিতে নিবন্ধন নেওয়া আছে, এমন প্রতিষ্ঠানসমূহ বিদ্যমান বিআইএন বাতিল হওয়ার আগ পর্যন্ত পুনঃনিবন্ধন গ্রহণের সুযোগ পাবেন।তবে নতুন নিবন্ধন নেওয়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
রেজাউল হাসান বলেন, ভ্যাট আইন-১৯৯১ এর আওতায় বর্তমানে ৮ লাখ নিবন্ধন রয়েছে। তবে অনলাইনে নিবন্ধন পদ্ধতি চালু হওয়ায় এর সংখ্যা বিপুল পরিমাণ কমে আসবে। কারণ আগে একটি প্রতিষ্ঠানকে আলাদা আলাদাভাবে নিবন্ধন নিতে হতো।এখন একটি ই-বিআইএন নম্বরে চলবে।
উল্লেখ্য,অনলাইনে সেবা নেওয়ার জন্য ভ্যাট নিবন্ধন বা ই-বিআইএন নেওয়ার বিষয়টি অনেকটা অনলাইনে কর শনাক্তকরণ নম্বর বা ই-টিআইএনের মতো।ভ্যাট নিবন্ধন ওয়েবসাইটের ঠিকানা Vat.gov.bd।