ডিএমপি নিউজ: উত্তরা পশ্চিম থানার ১৪ নম্বর সেক্টর, ১০ নম্বর রোডের ৩ নম্বর বাড়ির সপ্তম তলার ছাদের উত্তর পাশের রুমে অজ্ঞাতনামা আসামি /আসামিরা মৃত ভিকটিম কাজী গোলাপ হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে গত ২৭/০১/২০২০ তারিখ রাত অনুমান ০১:০৫ টা হতে ২৮/০১/২০২০ ইং তারিখ সকাল অনুমান ৯:০০ টার মধ্যে যেকোনো সময় অস্ত্র দিয়ে গলা এবং পেট কেটে হত্যা করে। এ সংক্রান্তে ২৮ জানুয়ারি, ২০২০ উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়। ঘটনাস্থল হতে হত্যাকারীর ব্যবহৃত জ্যাকেট, জুতা, চাঁদর, শিল-পাটাসহ অন্যান্য আলামত উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
উত্তরা জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ডিএমপি নিউজকে জানান, মামলা রুজু হওয়ার পর বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে থানার এসআই জিন্নাত আলী ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মাহমুদুল হাসান কদমতলী থানার শ্যামপুর পালপাড়া এলাকা থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি রাত দশটায় ঘটনার সাথে জড়িত মোঃ হৃদয় (২৪) কে গ্রেফতার করে।
হৃদয়কে আজ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করলে সে বিজ্ঞ বিচারককে জানিয়েছে, সে একজন অটোরিকশাচালক। রিক্সা চালানোর পাশাপাশি শহরে বিভিন্ন রাস্তায়, ট্রেনে ছিনতাই এবং চুরি করে থাকে; এছাড়া সে বিভিন্ন প্রকারের মাদক সেবন করে। ঘটনার দিন হৃদয় অটোরিক্সার ব্যাটারি চার হাজার টাকায় বিক্রি করে তার স্ত্রীর সাথে ঝগড়াঝাঁটি করে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা হতে বের হয়ে মধ্য রাতের দিকে আব্দুল্লাহপুর বাস স্ট্যান্ডে যায়। সেখানে দেখতে পায় তার পকেটে যে টাকা ছিল সে টাকাগুলো নেই ।
এরপর বাস কাউন্টারে গিয়ে লালমনিরহাট যাওয়ার জন্য ভিকটিম মোঃ গোলাপ হোসেনকে একটি টিকিটের ব্যবস্থা করে দিতে বলে। পরে কাউন্টার-মাস্টার গোলাপ হোসেন তাকে বলে যে এখন টিকিট নাই পরের দিন তোকে বাসে উঠায় দিবো বলে রাতে থাকার জন্য তার বাসায় নিয়ে যায়। বাসায় যাওয়ার পর তারা খাটের উপর শুয়ে পড়ে।
শোয়ার কিছুক্ষণ পর হতেই ভিকটিম গোলাপ হোসেন তার গায়ে হাত দেয় এবং তাকে জড়িয়ে ধরে। বারবার না করা সত্ত্বেও একই কাজ করায় আসামি ঘরে থাকা শিলপাটা দিয়ে রাগের মাথায় ভিকটিমের মুখে আঘাত করে, তারপর ঘরে থাকা বটি দিয়ে গলায় ও পেটে কোপ দেয়, এতে পেটের নাড়িভুড়ি বের হয়ে যায়। তারপর বাথরুমে গিয়ে হাত পরিষ্কার করে ভিকটিমের মৃতদেহ বিছানার চাদর দিয়ে এবং মুখ বালিশ দিয়ে ঢেকে দেয়।
আসামি তার একটি চাদর, সোয়েটার ও জুতা ফেলে রেখে যায় এবং যাওয়ার সময় ভিকটিমের পকেটে থাকা ৩০০ টাকা এবং রুমের টেলিভিশন নিয়ে রুমের দরজায় তালা লাগিয়ে ভোরের দিকে তার বাসায় চলে যায় ।
আসামির স্বীকারোক্তি মতে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভিকটিমের বাসা হতে নিয়ে যাওয়া টিভি কদমতলী থানার শ্যামপুরের পালপাড়া এলাকার জনৈক হানিফের চায়ের দোকান হতে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মাহমুদুল হাসান।