নানা আযোজনে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সারা দেশে উদযাপিত হয়েছে শ্যামাপূজা ও দীপাবলি উৎসব। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। যা কালী পূজা নামেও অধিক পরিচিত। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মঙ্গলালোকে সজ্জিত চারপাশ, মধ্যরাতে চলে শক্তির দেবী কালীর আরাধনা। আতশবাজি থেকে আলোর মালা, মোমবাতি, চিরায়ত মাটির প্রদীপের উজ্জ্বলে অশুভ শক্তির পরাজয় আর শুভ শক্তির বিজয়ের লক্ষ্যে একই সঙ্গে পালিত হয়েছে দীপাবলিও।
রাজধানী ঢাকার পাঁচ শতাধিক মন্দিরে শ্যামাপূজা হয়। মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে কেন্দ্রীয়ভাবে শ্যামাপূজা উদ্যাপিত হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় সহস্র প্রদীপ প্রজ্বালন করা হয়। সহস্র প্রদীপ প্রজ্জলন উদ্বোধন করেন অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। রমনা কালীমন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রমে দেশবাসী এবং বিশ্ব মানবতার কল্যাণ কামনায় সন্ধ্যায় মন্দির প্রাঙ্গণে পাঁচ হাজার প্রদীপ প্রজ্বলন করা হয়। রাতে পূজার পাশাপাশি ছিল অঞ্জলি প্রদান, প্রসাদ বিতরণ, আরতি, ধর্মীয় সঙ্গীত, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোকসজ্জাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, কালী শ্মশানের আধিষ্ঠাত্রী দেবী। আর সেজন্যই রাজধানীর ঢাকার পোস্তগোলা মহাশ্মশানসহ বিভিন্ন শ্মশানে ছিল উপচে পড়া ভিড়। মোমের আলো আর ধূপের ধোঁয়ায় মৃত স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনা করেছেন ধর্মপ্রাণ হিন্দুরা।
কালী পূজা; বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। এ উপলক্ষে সকাল থেকে হিন্দু ধর্মালম্বীরা ভিড় জমাতে থাকেন রাজধানীর বিভিন্ন মন্দিরে। সন্ধ্যা থেকে রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ, রমনা কালীমন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রম, সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির, জয়কালী মন্দির, শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, ফরাশগঞ্জ, লক্ষ্মীবাজার, বাংলাবাজার, সূত্রাপুর, দয়াগঞ্জ, শ্যামবাজারে ভোররাত পর্যন্ত ভিড় ছিল।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস; দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের মাধ্যমে ভক্তের জীবনে কল্যাণের অঙ্গীকার নিয়ে পৃথিবীতে আগমন ঘটে দেবী শ্যামার। তাই শ্যামা দেবী শান্তি, সংহতি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সংগ্রামের প্রতীক। অধিকাংশ দেব-দেবীর পূজা দিনে হলেও শ্যামা পূজা হয় রাতে। কার্তিক মাসের অমবস্যা তিথিতে এ পূজা হয়ে থাকে।