ডিএমপি নিউজ : এটিএম কার্ড অদল-বদল করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো মোঃ শহিদুল ইসলাম ওরফে শহিদ এবং মোঃ মামুন মাতুব্বর। গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত থেকে ডাচবাংলা ব্যাংকের দুটি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে ডিএমপির ডিবি কম্পাউন্ডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, গত ১৪ জুন মোঃ আতাউর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য দুপুর ২:১৫ টায় সময় ডাচবাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথে টাকা উত্তোলন করতে যান। এটিএম বুথে আগে থেকেই অবস্থান করা গ্রেফতারকৃত শহিদুল ইসলাম টাকা তোলার সাহায্যের কথা বলে কৌশলে ভিকটিমের অজান্তে এটিএম কার্ডটি পরিবর্তন করে অন্য একটি কার্ড দিয়ে দ্রুত এটিএম বুথ ত্যাগ করে। পরবর্তীতে অন্য একটি বুথে গিয়ে ভিকটিমের এটিএম কার্ড ব্যবহার করে ১ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে। ভিকটিম প্রতারকের দেওয়া কার্ডটি মেশিনে প্রবেশ করালে কার্ডটি আটকে যায়। কিছুক্ষণ পর ভিকটিমের মোবাইলে ১ লক্ষ টাকা উত্তোলনের ম্যাসেজ আসে। তাৎক্ষণিক ভিকটিম ব্যাংকের হেল্প লাইনে কথা বলে জানতে পারেন যে তার এটিএম কার্ড ব্যবহার করে ১ লক্ষ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এই ঘটনায় তিনি শাহবাগ থানায় মামলা রুজু করেন।
তিনি বলেন, মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হলে সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ তদন্ত শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় আজ ২৩ নভেম্বর রাজধানীর একটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
অপরাধের কৌশল সম্পর্কে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, ব্যাংকের এটিএম বুথে টাকা উত্তোলন করতে আসা মহিলা ও বৃদ্ধ লোকদের টার্গেট করে তারা এটিএম কার্ড বদল করে। যে সকল বুথে সিকিউরিটি গার্ড অন্যমনস্ক বা অনুপস্থিত থাকে কিংবা তাদের সহযোগিতায় গ্রেফতারকৃত শহিদুল এটিএম বুথের ভেতরে টাকা উত্তোলনের জন্য অবস্থান করে এবং বাইরে সহযোগী মামুন আশপাশে কেউ আসছে কি-না তা খেয়াল রাখে। তাদের কাছে দুটি ভিন্ন রংয়ের এটিএম কার্ড সাথে রাখে। এটিএম বুথে টাকা উত্তোলনের জন্য আসা মহিলা ও বৃদ্ধদের সাহায্য করার কথা বলে তাদের কাছ থেকে কার্ড চেয়ে নিয়ে কৌশলে মুহূর্তেই কার্ড অদল বদল করে ফেলে। গ্রেফতারকৃতদের কাছে থাকা এটিএম কার্ড মেশিনে প্রবেশ করে গ্রাহককে পিন চাপতে বলে এবং সেটা দেখে নেয়। পরে অন্য বুথে গিয়ে গ্রাহকের কার্ড ও পিন ব্যবহার করে টাকা উত্তোলন করে।
গ্রেফতারকৃত শহিদুলকে ইতোপূর্বে পুলিশ ৪ বার গ্রেফতার করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ৫ টি মামলা রয়েছে বলে জানান গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এসকল অপরাধ থেকে নিরাপদ থাকতে করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন,
* ব্যাংকের এটিএম বুথ গুলোতে ২৪/৭ সক্রিয় সিকিউরিটি গার্ড রাখার ব্যবস্থা করতে হবে এবং বুথে আগত সকল ব্যক্তিদের সিকিউরিটি গার্ড কর্তৃক নজর রাখতে হবে।
* গ্রাহকগণ এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলনের সময় পিন কোড সতর্কতার সাথে গোপনীয় ভাবে ব্যবহার করতে হবে।
* টাকা উত্তোলনের সময় ব্যাংক কর্মকর্তা/পরিচিত ব্যক্তিদের সহায়তা ছাড়া অজ্ঞাত ব্যক্তির সাহায্য নেওয়া হতে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে হবে।
* নিজের এটিএম কার্ড অপরের নিকট হস্তান্তর করা থেকে বিরত থাকতে হবে।