ট্রেন চলার অন্যতম প্রধান শর্ত রেললাইন। সেটি হতে পারে ব্রডগেজ কিংবা মিটারগেজ। তবে এবার ট্রেন চলবে রেললাইন ছাড়াই! রেললাইন ছাড়া চলা এই অত্যাধুনিক ট্রেনের নাম স্মার্ট ট্রেন। কম্পিউটারে প্রোগ্রাম করা ভার্চুয়াল লাইনের মাধ্যমে শহরের রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে সক্ষম এ ট্রেন। পথচারী এবং অন্য যানবাহনের সুবিধার্থে এর চলার পথে শুধু দুটি সমান্তরাল রেখা এঁকে দেওয়া হয়েছে। সমপ্রতি চীনের হুনান প্রদেশের ঝোউঝোউ শহরে স্মার্ট ট্রেন সার্ভিসটি চালু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে পরিবহন ব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে চীন।
নির্মাতা প্রতিষ্ঠান চায়নিজ রেল ট্রানজিট ফার্ম এর নাম দিয়েছে ‘স্মার্ট বাস’। ট্রেনটি লম্বায় ৩০ মিটার ও পুরোপুরি বিদ্যুত্চালিত। একবার চার্জ করে নিলে একটানা ২৫ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারবে ট্রেনটি। এর সঙ্গে সাদা দাগগুলোর সেন্সরের সংযোগ এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে যে কোনো প্রতিকূল অবস্থায়ও ট্রেনটি সাদা দাগের লাইন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সরে যেতে পারবে না। প্রথম পর্যায়ে চালু করা ট্রেনটিতে রয়েছে তিনটি কামরা যাতে একসঙ্গে ৩০০ যাত্রী চড়তে পারবেন। পরবর্তী সংস্করণে যাত্রী ধারণক্ষমতা ৫০০ করার চিন্তাভাবনা চলছে। প্রচলিত ধাতব টায়ারের বদলে এতে থাকবে রাবারের টায়ার।
রেললাইন বিহীন ‘স্মার্ট ট্রেন’ চীনের এ অত্যাধুনিক রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার নাম ‘অটোনোমাস রেল র্যাপিড ট্রানজিট’। সংক্ষেপে এআরটি। রেললাইন বিহীন ‘স্মার্ট ট্রেন’র প্রধান প্রকৌশলী ফেং জিয়াংহুয়া বলেন, প্রচলিত মেট্রো বা ট্রামের তুলনায় স্মার্ট ট্রেন নির্মাণের খরচ অনেক কম। রেললাইনের জন্য আলাদা পথ তৈরির দরকার নেই এতে। ট্রেনটি চলবে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে। তবে বেসিক কিছু নির্দেশনার জন্য এতে একজন চালক নিযুক্ত থাকবে। এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার। শহরের রাস্তায় অন্য যানবাহনের পাশাপাশি স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচলের জন্য ট্রেনের কাঠামোটিও তৈরি বিশেষভাবে। বর্তমানে ঝোউঝোউ শহরের ৩.১ কিলোমিটার দূরত্বের চারটি স্টেশনের মধ্যে ট্রেনটির চলাচল সীমাবদ্ধ থাকলেও পরিকল্পনা করা হচ্ছে ভবিষ্যতে চীনের অন্যান্য শহরেও চলবে এই ট্রেন।