ডিএমপি নিউজঃ ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্র ও ব্যবসায়িক রাজধানী বলে খ্যাত চকবাজার এলাকার যানজট নিরসনে ওয়ানওয়ে হলো চকবাজার ও তার আশাপাশ এলাকার ৯টি রাস্তা।
আজ ৩০ মার্চ বেলা ১২ টায় চকবাজার শাহী মসজিদের সামনে ওয়ানওয়ে রোডের উদ্বোধন করেন ঢাকা ৭ আসনের সাংসদ হাজী মোঃ সেলিম। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম (বার), পিপিএম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল হাসনাত, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মফিজ উদ্দিন আহমেদ পিপিএম, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মোঃ মনির হোসেন বিপিএম।
চক বাজারের ওয়ানওয়ে হওয়া ৯টি রাস্তার রুট হচ্ছে-
আজগর লেন- ওয়াহেদ ম্যানসন-নন্দকুমার দত্ত রোড-চকবাজার সার্কুলার রোড। নন্দকুমার দত্ত রোড-ওয়াটার ওয়াক্স রোড-ছোট কাটরা। ওয়াটার ওয়াক্স রোড-দেবিদাস ঘাট লেন। বেগম বাজার- হাজী সেলিম টাওয়ার। বেগম বাজার থেকে সম্পূর্ণ মৌলভী বাজার। চক সার্কুলার রোড থেকে তাজমহল রোড হয়ে মিটফোর্ড হাসপাতাল। নন্দকুমার দত্ত রোড- ওয়াহেদ ম্যানসন। হায়দার বক্স লেন- ওয়াহেদ ম্যানসন। নন্দকুমার দত্ত রোড- এ্যামেরিকান গলি। হরনাথ ঘোষ রোড- গৌরসুন্দর রায় লেন। এসব রোডগুলোকে ওয়ানওয়ে করা হয়েছে। বাকী চওড়া রোডগুলো টুওয়ে বা দ্বিমূখী করা হয়েছে।
ওয়ানওয়ে রোড উদ্বোধন শেষে কমিশনার বলেন, ঐতিহ্যবাহী চকবাজার ঢাকার প্রাণকেন্দ্র। ব্যবসায়ীকভাবে চকবাজার অনেক ব্যস্ততম একটি জায়গা। চকবাজার থানা ও লালবাগ ট্রাফিক বিভাগের সহায়তায় এই এলাকার ৯টি রাস্তা ওয়ানওয়ে করা হয়েছে। বাকী চওড়া রাস্তাগুলো টুওয়ে করা হয়েছে। জনসাধারণকে অবগত করার জন্য রাস্তার প্রবেশমূখে একমূখী ও দ্বিমূখী চলাচলা সম্বলিত সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দেয়া হবে। একমূখী ও দ্বিমূখী রাস্তা চলাচলের প্রচারণা আপনাদের চালাতে হবে। আপনাদের সকলকে নিয়ে এই পরিকল্পনা করা হয়েছে। এটা বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব আমাদের সবার। যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় নিয়মিতভাবে ট্রাফিক পুলিশ ডিউটি করবে।
তিনি বলেন, ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তায় থেকে কর্মঘন্টা নষ্ট হলে এটি শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতি না রাষ্ট্রীয় ক্ষতি। কেউ যদি ইচ্ছা করে ট্রাফিক রুল ভঙ্গ করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ওয়ানওয়ে রোড এক সপ্তাহ ট্রায়েল চলবে তারপর স্থানীয়দের নিয়ে বসে পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও পরিমার্জন করবেন। সেক্ষেত্রেও জনগণকে অবহিত করতে হবে।
ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে কমিশনার বলেন, কেউ যদি টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজি করে তাহলে আমাদেরকে জানান। আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিবো। সকল ব্যবসায়ী ও ভবন মালিকেরা আপনাদের প্রতিষ্ঠান, ভবন ও তার আশপাশের নিরাপত্তায় সিসিটিভি লাগান। এতে করে অপরাধী অপরাধ করতে সাহস পাবে না। অপরাধ করলেও পার পাবে না। প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র রাখুন। বাসা-বাড়িতে কোন প্রকার দাহ্য পদার্থ, কেমিক্যাল রাখা যাবে না। থাকলে অন্যত্র সড়িয়ে নিন। এরপরও যদি কারও বাসা-বাড়িতে কেমিক্যাল ও দাহ্য পদার্থের গোডাউন পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চকবাজার এলাকার রাস্তায় যাতে করে কোন ধরণের হকার বসতে না পারে সেজন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন কমিশনার।
কমিশনার আরো বলেন, সকল শ্রেণী, পেশার মানুষ ঐক্য হয়ে জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে যেভাবে আপনারা সহযোগিতা করেছেন ঠিক সেভাবে মাদক নির্মূল করতে আমাদের সহযোগিতা করুন। মাদকের ব্যবসা যেই করবে তাকে ছাড় দেয়া হবে না। ঢাকা শহরে কোন মাদক ব্যবসায়ীর স্থান হবে না।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। চকবাজারস্থ ৪৫টি ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, কমিউনিটিং পুলিশ, রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ।