কথিত ম্যাগনেটিক কয়েনের মাধ্যমে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগে এক প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হল-মোঃ ইউসুফ আলী, মোঃ খবির চৌকিদার, মোঃ শামীম, মোঃ নাসির উদ্দিন আকন ও মোঃ জসিম গাজী। এসময় তাদের হেফাজত থেকে কথিত ১০টি ম্যাগনেটিক কয়েন উদ্ধারমূলে জব্দ করা হয়।
এ সংক্রান্তে গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এস এম রেজাউল হক ডিএমপি নিউজকে বলেন, ভিকটিম একজন ব্যবসায়ী। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ভিকটিমের পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে কয়েকজন ম্যাগনেট কয়েন ব্যবসায়ীর পরিচয় করিয়ে দেয়। আলাপ আলোচনার এক পর্যায়ে ব্যবসায়ীরা ভিকটিমকে তাদের কাছে থাকা একটি কয়েনের কথা বলে, যা ক্রয় করে দেশে বা বিদেশে বিক্রি করলে সে অনেক টাকার মালিক হতে পারবে। ম্যাগনেট কয়েন কেনার জন্য মিন্টু নামে এক ব্যক্তি ইনভেষ্ট করেছেন যার সাথে দেখা করার জন্য ভিকটিম খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ এলাকায় যায়। সেখানে ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফ নামে এক ব্যাক্তির সাথে তার পরিচয় করিয়ে দেয় ম্যাগনেট কয়েন ব্যবসায়ীরা। এসময় ইউসুফ ভিকটিমকে ম্যাগনেট কয়েন কেনার জন্য উৎসাহিত করে। ইউসুফ সাহেব ইঞ্জিনিয়ার হওয়ায় এবং ম্যাগনেট কয়েন সম্পর্কে তার ধারণা থাকায় ভিকটিম তার কথা বিশ্বাস করে। ভিকটিম উক্ত অফিসে প্রায়শই যাতায়াত করতে থাকে। যাতায়াত এবং কথাবার্তার মাধ্যমে এক পর্যায়ে ভিকটিম ২৮ আগস্ট ২০২২ তারিখ সকাল ১১.৩০ টায় মিন্টু সাহেবের বর্ণিত ঠিকানায় কথিত ম্যাগনেট কয়েন ক্রয় করার জন্য ৭৫ লাখ টাকা মোঃ ইউসুফ আলী, মোঃ খবির চৌকিদার, মোঃ শামীম, মোঃ নাছির, মোঃ জসিম ওরফে জুয়েলদের নগদ প্রদান করে। টাকা প্রদানের ৩/৪ দিন পর ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফ ফোন করে ভিকটিমকে জানায় যে, কয়েকদিনের মধ্যে তাদের বরিশাল যেতে হবে। গত ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখ প্রাইভেট কারযোগে ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফসহ ভিকটিম বরিশাল যায়। সেখানে তারা একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করে এবং ফোনে ইঞ্জিনিয়ার ম্যাগনেট কয়েন ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করে। তারা কথিত ম্যাগনেট কয়েন নিয়ে আসবো, আসতেছি বলে কালক্ষেপন করতে থাকে। গত ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ সকালে ভিকটিমকে হোটেলে রেখে ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফ ম্যাগনেট কয়েন এর মালিকদের সঙ্গে দেখা করতে যায়। পরে ভিকটিম বারবার তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। তখন ভিকটিম বুঝতে পারে সে প্রতারণার শিকার হয়েছে। এরপর ভিকটিম বাদী হয়ে খিলক্ষেত থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
তিনি বলেন, মামলাটির তদন্তকালে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এ ঘটনার সাথে জড়িতদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২) ধানমন্ডি থানার লেকপাড় এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে প্রতারণার সাথে সম্পৃক্ত ইউসুফ আলী, খবির চৌকিদার, শামীম, নাসির ও জসিম গাজীকে গ্রেফতার করা হয়। প্রতারক চক্রটির অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতার অভিযান অব্যহত রয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের খিলক্ষেত থানায় রুজুকৃত মামলায় বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান, বিপিএম (বার), পিপিএম (সেবা) এর সার্বিক তত্তাবধানে এবং ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এস এম রেজাউল হক এর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।