সনদ-বাণিজ্যে জড়িত অভিযোগে স্ত্রী গ্রেপ্তার হওয়ার পর বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়া মো. আলী আকবর খানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে তাঁকে ডাকা হয়। তাঁর সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কেপায়েত উল্লাহকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল।
ডিবির লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) মশিউর রহমান বিপিএম-বার, পিপিএম-সেবা বলেন, বছরের পর বছর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের জাল সনদ বিক্রি করা হচ্ছিল। এসব সনদের বিষয়ে চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জানতেন কি না, সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অনেক ঘটনার সিসি (ক্লোজড সার্কিট) ক্যামেরার ফুটেজ ছিল, প্রমাণ ছিল। তাঁরা নিজেরা যুক্ত থাকার কারণে, নাকি অনিচ্ছাকৃতভাবে তাঁরা জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি, সে বিষয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
মশিউর রহমান আরও বলেন, আসামিদের জবানবন্দিতে চেয়ারম্যানসহ অনেকের নাম এসেছে। এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তাঁদের ডাকা হয়। তাঁরা অনেক তথ্য দিয়েছেন। এসব তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। যাচাই–বাছাই শেষে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
এর আগে গত শনিবার কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আলী আকবর খানের স্ত্রী সেহেলা পারভীনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গতকাল রোববার তাঁর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
স্ত্রীকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের পদ থেকে আলী আকবর খানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তাঁকে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে।
জাল সনদ দেওয়ার ঘটনায় প্রথমে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট শামসুজ্জামান, বোর্ডের সাবেক কর্মচারী ও বর্তমানে শামসুজ্জামানের সনদ তৈরির নিজস্ব কারখানায় নিয়োজিত কম্পিউটারম্যান ফয়সাল হোসেন, গড়াই সার্ভে ইনস্টিটিউটের পরিচালক সানজিদা আক্তার ওরফে কলি, হিলফুল ফুজুল নামের কারিগরি প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল সরদার গোলাম মোস্তফা ও যাত্রাবাড়ীর ঢাকা পলিটেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালক মাকসুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন রিমান্ডে আছেন।
এই আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জাল সনদ দেওয়ার এই চক্রে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সদ্য চেয়ারম্যান আলী আকবরের স্ত্রী সেহেলা পারভীনের নাম আসে। ডিবি সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিকভাবে সেহেলা পারভীনের বিরুদ্ধে শামসুজ্জামানের সঙ্গে টাকাপয়সা লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। সূত্র: প্রথম আলো