আলো ঝলমলে নগরীর উল্টো দিকে একটা ছোট্ট দ্বীপ৷ সেই দ্বীপেই থাকে একপাল কুকুর৷ রাতের অন্ধকারে তারা চেয়ে থাকে ঝলমলে শহরের দিকে৷ নির্জন এমনই এক স্থানের খোঁজ মিলেছে৷ সেই স্থান কুকুর দ্বীপ নামেই পরিচিত৷
বিবিসি জানাচ্ছে, করাচি শহর থেকে কিছু দূরে আরব সাগরের মধ্যে এক ছোট্ট দ্বীপ আছে৷ সেখানে কোনও মানুষ থাকেনা৷ এখানকার একমাত্র বাসিন্দা কিছু কুকুর৷ এই দ্বীপের খবর এতদিন তেমন কেউ রাখতেন না৷ করাচির কিছু মৎসজীবীরাই কেবল জানতেন কুকুর দ্বীপের কথা৷ কারণ তাদের দেওয়া জল আর খাবারের অপেক্ষায় দিনভর অপেক্ষা করে দ্বীপবাসী কুকুরের দল৷
চারিদিকে কেবল লবণাক্ত জল, ফলে কুকুরে দল খাওয়া বা পান করার জন্য কিছুই পায়না। দ্বীপে মানুষের আগমন টের পেলে কুকুরগুলো দল বেধে কাছে আসে খাবারের আশায়।
বিবিসি জানাচ্ছে, করাচি উপকূলের কাছে দ্বীপটিতে দিনভর ঘুরে বেড়ায় কুকুরগুলো। সেখানে নিয়মিত মাছ ধরেন এমন জেলেরা কুকুরগুলোর দেখাশোনা করেন। এদের একজনের নাম মুনির৷ তিনি জানিয়েছেন, কুকুরগুলোর দেখভাল করার কেউ নেই বলে তিনি প্রায়ই ওদের দেখাশোনা করেন। মুনির জানিয়েছেন, আমাদের নৌকা দ্বীপের কাছে আসতে দেখলেই কুকুরগুলো ছুটে আসে। কারণ তারা জানে আমরা তাদের কিছু না কিছু দেবো। মৎস্যজীবীরা নিজ উদ্যোগে সেখানে নিয়মিত জল ও খাদ্য পৌঁছে দেন৷
স্থানীয় জেলেরা বলছেন বেশ কয়েক দশক ধরেই এই দ্বীপে তারা কুকুরের দল দেখছেন। কেউ কেউ বলেন এগুলো আসলে ভিনদেশি নাবিকদের ছেড়ে দেয়া কুকুর। অনেকের অভিযোগ, করাচি শহর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন স্থান থেকে বেওয়ারিশ কুকুর ধরে এই দ্বীপে রেখে যায়৷
রিপোর্টে বলা হয়েছে, পাকিস্তানীদের মধ্যে অনেকেই বিশ্বাস করেন কুকুর পরিচ্ছন্ন প্রাণী নয়, আর সে কারণে তাদের স্পর্শ করা উচিত নয়। দেশের বাণিজ্য নগরী করাচি শহরে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা বাড়ছেই৷
অখ্যাত এক দ্বীপ আচমকা কুকুর দ্বীপ (ডগ আইল্যান্ড) হিসেবে পরিচিত হওয়ায় চমকে গিয়েছেন অনেকেই৷ অভিযোগ, এই দ্বীপে ঘর–বাড়ি বানানোর পরিকল্পনা নিয়েছে কিছু প্রমোটার৷ প্রতিবাদ করেছেন পরিবেশবিদরা৷ পাল্টা অভিযোগ, তাহলে দ্বীপবাসী কুকুরদের কী হবে৷-বিবিসি