ক্যানসারের মতো থ্যালাসেমিয়া হল এমন একটি রোগ যা সঠিক সময় ধরা না পড়লে মারন রোগে পরিণত হয়ে যায়। তবে থ্যালাসেমিয়ার সঙ্গে লড়াই করার জন্য প্রয়োজন সতর্কতা এবং সচেতনতা। এই সচেতনতা বৃদ্ধির জন্যই প্রতিবছর ৮ মে সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হয় বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস।
থ্যালাসেমিয়া কী?
থ্যালাসেমিয়া হল এমন একটি রোগ, যাতে শরীরে হঠাৎ করে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায়। প্রধানত তিন ধরনের থ্যালাসেমিয়া দেখতে পাওয়া যায়। আলফা থ্যালাসেমিয়া, বিটা থ্যালাসেমিয়া এবং থ্যালাসেমিয়া মাইনর। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তে লোহিত রক্তকণিকা, হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ এতটাই কমে যায় যে যার ফলে তার শরীরে রক্তাল্পতা দেখা যায় এবং বারবার রক্ত পরিবর্তন করতে হয়।
থ্যালাসেমিয়ার লক্ষণ
থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে দুর্বলতা, ক্লান্তি, ত্বক ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া, হার্টের সমস্যা এবং শরীরে আয়রন জমে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা যায়।
কেন পালন করা হয় বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস?
বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস পালন করা হয় থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ে আরো বেশি সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য। এই দিন বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসকের মাধ্যমে বিনামূল্যে থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করা হয়। শুধু তাই নয়, থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীদের সাহায্য করার জন্য এই দিন বিভিন্ন জায়গায় রক্তদান শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়।
২০২৪ সালে থ্যালাসেমিয়া দিবসের থিম
২০২৪ সালে থ্যালাসেমিয়া দিবসের থিম হল ‘Empowering Lives, Embracing Progress: Equitable and Accessible Thalassaemia Treatment for All.’ এর অর্থ হলো, জীবনের ক্ষমতায়ন, অগ্রগতি আলিঙ্গন এবং সকলের জন্য ন্যায়সঙ্গত এবং অ্যাক্সেস যোগ্য থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসা।
থ্যালাসেমিয়া রোগ হলে কী করা যায়
নিয়মিত রক্ত পরিবর্তন: থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীদের শরীরে বারবার লোহিত রক্ত কণিকার ঘাটতি লক্ষ্য করা যায়। শরীরকে সচল করে রাখার জন্য তাই রোগীকে বারবার রক্ত দিতে হতে পারে।
চিলেশন থেরাপি: শরীর থেকে অতিরিক্ত আয়রন অপসারণের জন্য যে ওষুধগুলি ব্যবহার করা হয় তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া খুবই সাংঘাতিক হয়। ওষুধ না ব্যবহার করে এই থেরাপির মাধ্যমে আপনি রোগীকে সুস্থ করতে পারবেন।
আয়রন সমৃদ্ধ খাবার: থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য আয়রন ওভারলোড উদ্বেগ জনক হলেও রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য প্রয়োজন আয়রন সমৃদ্ধ খাবার। তবে আয়রন সাপ্লিমেন্ট এড়িয়ে চলতে হবে অবশ্যই।
হাইড্রেশন: থ্যালাসেমিয়া রোগীদের শরীরে যেহেতু রক্তের অভাব থাকে তাই রোগী যাতে ডিহাইডেট্রেড না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়াও রক্তে হিমোগ্লোবিন, আয়রনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আছে কিনা সেটাও লক্ষ্য রাখতে হবে।
সংক্রমণ এড়ানো: থ্যালাসেমিয়া রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেহেতু খুবই কম থাকে তাই যাতে রোগীদের শরীরে কোনওভাবে সংক্রমণ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সর্বোপরি রোগীদের পাশে সব সময় হাসি মুখে থাকতে হবে যাতে রোগী মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ে।-হিন্দুস্থান টাইমস