বন্যা বিধ্বস্ত কেরলের পুনর্বাসনে আন্তর্জাতিক সাহায্য নেবে না ভারত। বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল মোদী সরকার। বিদেশমন্ত্রক থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হল, বিভিন্ন দেশ ও সরকারের কাছ থেকে ত্রাণ ও অর্থ সহযোগিতার প্রস্তাব এসেছে। তাদের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে ভারত সরকার। তবে বর্তমান নীতি অনুযায়ী বিদেশ থেকে ত্রাণ বা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিতে পারবে না কেন্দ্র। তবে অনাবাসী ভারতীয়, ভারতীয় বংশোদ্ভূত বা আন্তর্জাতিক সংগঠনের তরফে সাহায্য এলে, তা স্বাগত।
সকালে জানা গিয়েছিল, বিদেশি সরকারের সমস্ত রকম অর্থসাহায্য অত্যন্ত নম্রতার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করার জন্য ভারতীয় দূতাবাসগুলিকে নির্দেশ দিয়েছিল মোদী সরকার। তাদের বলা হয়েছিল, নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী, দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াবে ভারত সরকার।
যদিও সরকারের এই অবস্থানের বিরোধিতা করেছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। ২০১৬ সালের জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা নীতির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, সৌহাদ্যপূর্ণভাবে কোনও সরকার বন্যাপীড়িতদের পাশে দাঁড়াতে চাইলে, তা স্বীকার করা উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের।
ভারতকে সহযোগিতার প্রস্তাব এসেছিল আরব আমিরশাহি ও মালদ্বীপের কাছ থেকে। এর আগে উত্তরাখণ্ডের প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর সহযোগিতা করতে চেয়েছিল রাশিয়া। তবে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে তত্কালীন ইউপিএ সরকার।
উল্লেখ্য, কেরলেকে ৭০০ কোটি টাকা সাহায্য দেওয়ার প্রস্তাব দেয় সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। কেরলের পাশে থাকার জন্য আরব আমিরশাহিকে টুইটে ধন্যবাদও জানান সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। এনডিটিভি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, আরব আমিরশাহির সাহায্য বিষয়ে কোনও তথ্য কেন্দ্রের কাছে নেই বলে জানা যায়। এমনকি বিদেশমন্ত্রকের এক আধিকারিক জানান, যদি এমন কোনও সাহায্যের প্রস্তাব এসে থাকলেও তা গ্রহণ করবে না কেন্দ্র। বিপর্যয় মোকাবিলায় বিগত উদাহরণ টেনে নিয়ে এসে ওই আধিকারিকের বক্তব্য, এর আগে এমন পরিস্থিতি বিদেশের সাহায্য নেওয়া হয়নি। উল্লেখ্য, সুনামি এবং উত্তরাখণ্ডের বন্যার মতো ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে কোনও বিদেশি সাহায্য গ্রহণ করেনি তত্কালীন মনমোহন সরকার। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং জানিয়েছিলেন, “এই বিপর্যয় মোকাবিলা করার ক্ষমতা ভারতের আছে। প্রয়োজন হলে সাহায্য চাইবে ভারত।” পরবর্তীকালে অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে বিদেশি সাহায্য নিতে হয়নি ভারতকে।