কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার ছন্দকে প্রতিনিয়ত বিঘ্নিত করে। কোষ্ঠকাঠিন্যের ফলে প্রতিদিন শরীর থেকে মল স্বাভাবিক ভাবে নির্গত হতে পারে না। খাওয়া-দাওয়ার পরিমাণ বা ইচ্ছার ক্ষেত্রেও যার প্রভাব পড়ে। পেট ভরে কিছু খাওয়ার ক্ষেত্রে একটা ভয় যেন সারাক্ষণ তাড়া করে বেড়ায়। পঞ্চাশোর্দ্ধো অনেক মানুষই এই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন। গর্ভবতী মহিলাদেরও এই সমস্যা দেখা যায়।
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অপরিকল্পিত ডায়েট, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাসের কারণে হয়ে থাকে। তবে কিছু ক্ষেত্রে এই সমস্যা বংশানুক্রমিক। সময়মতো কোষ্ঠকাঠিন্যে যথাযথ ব্যবস্থা বা সতর্কতা অবলম্বন না-করলে তা কোলন ক্যান্সারের সম্ভাবনা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের এই খাবারগুলি এড়িয়ে চলাই ভাল:
কাঁচকলা: অনেকেই বলেন, কাঁচকলা আমাদের শরীর-স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। কিন্তু যাঁদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে, তাঁরা কাঁচকলা খেলে ফলাফল হবে একেবারে উল্টো। তবে পাকা কলায় যথেষ্ট পরিমাণ ফাইবার আছে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় পাকা কলা খাওয়া যেতে পারে।
মাংস: রেড মিট (খাসির মাংস বা যে সব মাংসে চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে)। এই জাতীয় খাবার অন্ত্রে বহুক্ষণ থাকে, হজম হতে সময় লাগে। এই জাতীয় মাংস কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
দুধ: দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার (যেমন: পনির, আইসক্রিম ইত্যাদি) কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়াতে পারে অনেকের। আসলে এ ধরনের খাবারে ফাইবারের পরিমাণ খুব কম। তবে দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় দুধ থাকাটা খুবই জরুরি। হজমে সহায়ক হিসেবে টক দই খুবই উপকারি।
তেলেভাজা: স্ন্যাকস জাতীয় খাবার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চিকেন ফ্রাই, পটেটো চিপস বা ওই জাতীয় তেলে ভাজা খাবার অন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকর। এগুলি অন্ত্রের স্বাভাবিক কাজে বাধা দেয়। এগুলি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়।
হিমায়িত খাবার: ঠান্ডায় সংরক্ষিত বা প্রক্রিয়াজাত খাবারে জল শুকিয়ে ফেলা হয় এবং এই খাবারগুলিতে লবনের পরিমাণ বেশি থাকে। ফলে এ ধরনের খাবারে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে।
বেকারি পণ্য: বেকারি পণ্য যেমন, বিস্কুট, ক্র্যাকার্স বা পেস্ট্রিজাতীয় খাবারে ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকে। শুধু তাই নয় বেকারির খাবারে জলীয় অংশ বা ফাইবারের পরিমাণ অত্যন্ত কম থাকে। যাঁদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে, তাঁদের জন্য এগুলি এড়িয়ে চলাই ভাল।
উপরে উল্লেখিত খাবার-দাবারগুলি এড়িয়ে চললে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। তবে এই সমস্যায় অবশ্যই চিকিত্সকের পরামর্শ মেনে চলা উচিত।