রাশিয়া বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আজ মুখোমুখি হচ্ছে দুই ইউরোপীয় ফুটবল শক্তি ইংল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়া। বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় মস্কোর লুজনিকি স্টেডিয়ামে খেলাটি অনুষ্ঠিত হবে। চলুন দেখে নিই দুই দলের অতীত পরিসংখ্যান কী বলছে?
১. বিশ্বকাপ আসরে ব্রিটিশদের একমাত্র শিরোপা ১৯৬৬ বিশ্বকাপে। সেবার জয় এসেছিল তাদের ঘরের মাঠে।
২. ১৯৯০-র পর প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের শেষ চারে উঠেছে ইংল্যান্ড। সেবার সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে টাইব্রেকারে হেরেছিল তারা।
৩. ১৯৯১ সালে যুগোস্লাভিয়া ভেঙে যাওয়ার পর ছয়টি বিশ্বকাপের পাঁচটিতেই খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে ক্রোয়েশিয়া। ১৯৯৮ বিশ্বমঞ্চে নিজেদের অভিষেকেই শেষ চারে উঠেছিল তারা। ওই আসরের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের কাছে সেমিফাইনালে হারের পর তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ক্রোয়েশিয়া জয় পায় নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। এটাই বিশ্বমঞ্চে দেশটির সেরা পারফরম্যান্স।
৪. রাশিয়া বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত অপরাজিত ক্রোয়েশিয়া। ডি-গ্রুপে তিন ম্যাচই জিতে পুরো নয় পয়েন্ট নিয়ে নকআউট পর্বে ওঠে জ্লাতকো দালিচের দল। প্রতিপক্ষের জালে সাতবার বল জড়ানোর বিপরীতে নিজেরা হজম করেছে মাত্র একটি গোল।
৫. অন্যদিকে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে নকআউট পর্বে ওঠা ইংল্যান্ড বেলজিয়ামের বিপক্ষে গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে ১-০ গোলে হারে।
৬. দুই গোল করে এবারের আসরের ক্রোয়েশিয়ার সেরা গোলদাতা অধিনায়ক লুকা মডরিচ। বিপরীতে ছয় গোল করে টুর্নামেন্টে গোলদাতাদের তালিকায় সবার উপরে রয়েছেন হ্যারি কেন। বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের হয়ে তার চেয়ে বেশি গোল আছে শুধু গ্যারি লিনেকারের। ১০ গোল করেছিলেন লিনেকার। তবে এক জায়গায় পূর্বসূরিকে স্পর্শ করেছেন ইংলিশ অধিনায়ক। বিশ্বকাপের এক আসরে সর্বোচ্চ ছয় গোলের রেকর্ড ছিল সাবেক স্ট্রাইকার লিনেকারের। ১৯৮৬ মেক্সিকো বিশ্বকাপে এই কীর্তি গড়েন তিনি। ৩২ বছর পর কেনের সামনে এখন রেকর্ড এককভাবে নিজের করে নেয়ার হাতছানি।
৭. চলতি টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ডের করা ১১টি গোলের আটটিই এসেছে পেনাল্টিসহ সেটপিস থেকে। এক বিশ্বকাপে সেটপিস থেকে এরচেয়ে বেশি গোল করার রেকর্ড নেই কোনো দলের। ১৯৬৬-র আসরে পর্তুগালও সেটপিস থেকে আটটি গোল করেছিল। রেকর্ডটা এককভাবে নিজেদের করে নেয়ার সুযোগ রয়েছে কেন-রাহিম স্টার্লিংদের।
৮. ১৯৬৬-তে নিজেদের একমাত্র বিশ্বকাপ জয়ের আসরে সর্বোচ্চ ১১ গোল করেছিল ইংল্যান্ড। এরই মধ্যে বিশ্বকাপের এক আসরে নিজেদের সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেছে গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরা। সেমিফাইনালে রেকর্ড নতুন করে লেখার সুযোগ তাদের সামনে।
৯. ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা নিজের শেষ ৩০টি ম্যাচে হারের মুখ দেখেননি মিডফিল্ডার জর্ডান হেন্ডারসন। যে কোনো ইংলিশ খেলোয়াড়ের সবচেয়ে বেশি ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড এটি।
১০. শেষ ষোলোয় কলম্বিয়ার বিপক্ষে জিততে টাইব্রেকারের প্রয়োজন হয় ইংলিশদের। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে সহজেই ২-০ গোলে সুইডেনকে হারায় তারা। অন্যদিকে গ্রুপপর্বে দারুণ পারফর্ম করা ক্রোয়েশিয়ার নকআউট পর্বটা এখন পর্যন্ত সহজ হয়নি। শেষ ষোলোয় টাইব্রেকারে ডেনমার্ককে হারানোর পর কোয়ার্টার ফাইনালে স্বাগতিক রাশিয়া-বাধা পেরোতেও দরকার হয়েছে পেনাল্টি শুটআউটের।
১১. বিশ্বকাপে এর আগে কখনই ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়নি ক্রোয়েশিয়া। আন্তর্জাতিক কোনো টুর্নামেন্টে দু’দলের একমাত্র সাক্ষাৎ হয়েছিল ২০০৪ ইউরোয়। সেবার ৪-২ গোলে ইংলিশদের পরাস্ত করে ক্রোটরা। সব মিলিয়ে দু’দলের দেখা হয়েছে সাতবার। চার জয় নিয়ে এগিয়ে ইংল্যান্ড। ক্রোয়েশিয়ার জয় দুটি। ১৯৯৬ সালে দু’দলের প্রথম ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হয়।