৫০ দিনের লম্বা সফর শেষে দেশে ফিরে এসেছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। দেশে ফিরেই পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে ব্যাকুল ছিলেন সবাই। যদিও অনেক ক্রিকেটারই স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে সফরে গিয়েছিলেন। কিন্তু সামনে ঈদ, তাই বাবা-মা, ভাই-বোন সবাইকে সময় দিতে বাড়ির পথে গ্রামের দিকে ছুটছেন সবাই। কেউ কেউ পরিবারের জন্য ইংল্যান্ড থেকে ঈদ উপহার কিনে এনেছেন। আবার কেউ ঢাকায় ফিরেও কেনাকটা করেছেন আপনজনের জন্য।
জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ঈদ করবেন খুলনার নড়াইলে তার নিজ গ্রামে। সেখানে তার জন্য অপেক্ষা করছেন মা-বাবা। তার ডেপুটি টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও মাগুরাতে ঈদ করবেন বলে জানা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত সেটি নিশ্চিত নয়। টেস্ট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম ইংল্যান্ড থেকে দলের সঙ্গে না ফিরলেও তিনি দেশেই ঈদ করবেন পরিবারের সঙ্গে।
ক’দিন আগে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে সিঙ্গাপুরে গেছেন টেস্ট দলের সহ-অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তবে ঈদের আগেই তিনি দেশে ফিরে আসবেন। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করবেন নিজ শহর চট্টগ্রামেই। জাতীয় দলের তারকাদের মধ্যে ঢাকায় ঈদ করবেন মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা তরুণ তাসকিন আহমেদ। বাকিদের বেশির ভাগই চলে যাবেন গ্রামের বাড়িতে। বিশেষ করে ঈদে এবার খুলনা হবে তারকাদের মেলা। অন্যদিকে জাতীয় দলের আরেক তরুণ সদস্য উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান নূরুল হাসান সোহান ঈদের পরই বসছেন বিয়ের পিড়িতে। ৩০শে জুন তার বিয়ে খুলনা ক্লাবে।
তিন দিন আগেই ঢাকা ছেড়ে খুলনার পথ ধরেছেন সৌম্য সরকার, নূরুল হাসান সোহান, মোস্তাফিজুর রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজরা। ইমরুল কায়েসও চলে যাবেন ঈদ করতে মেহেরপুরে। ইংল্যান্ড থেকে দলের সঙ্গে ফিরেননি এই ক্রিকেটার। স্ত্রীকে নিয়ে তিনি ইংল্যান্ডেই করেছেন ঈদ শপিং করেছেন। ইমরুল বলেন, ‘এবারও ঈদ গ্রামের বাড়িতেই করবো। সবার জন্য ইংল্যান্ড থেকে ফেরার পথে শপিং করেছি। আসলে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঈদ করার আনন্দটাই আলাদা। তারাও অনেক দিন অপেক্ষা করে ছিলেন আমার জন্য।’
মাশরাফি, সাকিব, রুবেল হোসেনসহ জাতীয় দলের ৭/৮ জন তারকা ক্রিকেটারই ঈদে খুলনাতে থাকবেন। বিশেষ করে তারা যোগ দিতে পারেন নূরুল হাসান সোহানের বিয়েতে। তাই খুলনাতে এবার ঈদে থাকছে ক্রিকেট তারকাদের ভিড়।
বিয়ে নিয়ে সোহান বলেন, ‘আসলে আগেই ঠিক হয়েছিল বিয়ে। এখন বউ তুলে আনতে হবে। তাই এই আনুষ্ঠানিকতা। আশা করি সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। হ্যাঁ, বলতে পারেন ঈদের সঙ্গে বিয়ের খুশিটাও যোগ হচ্ছে। রুবেল হোসেন অবশ্য খুব আনন্দ নিয়ে ঈদ করতে পারছেন না। কারণ ইংল্যান্ডে ইনজুরিতে পড়ে এরই মধ্যে তার বাম কান ও চোখের মাঝের স্থানটিতে অস্ত্রোপচার করাতে হয়েছে। সুস্থ হতে তাকে অপেক্ষা করতে হবে এক মাস।
অন্যদিকে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ঈদ করবেন ময়মনসিংহে। এরই মধ্যে পরিবারের সবার জন্য শপিং শেষ করেছেন সৈকত। সাব্বির রহমান রুম্মান এরই মধ্যে চলে গেছেন রাজশাহীতে। ইংল্যান্ড থেকে পরিবারের সবার জন্য কেনাকটা করেছেন। বাবা-মা, ভাই-ভাবি সবার জন্যই কিছু না কিছু নিয়ে এসেছেন তিনি। ঈদ নিয়ে সাব্বির বলেন, ‘এত লম্বা সময় দেশের বাইরে ছিলাম যে সবাই আমাকে দেখার জন্য ব্যাকুল ছিল। আমি বাসায় ফেরাতেই সবাই ভীষণ খুশি। ঈদ করবো পরিবারের সঙ্গে। আমি ইংল্যান্ড থেকে আম্মু-আব্বু, ভাই-ভাবি, বোন সবার জন্য উপহার নিয়ে এসেছি। সবাই ভীষণ খুশি। আমিও খুশি।’ ঈদের ছুটিতে বাড়ি গেছেন সৌম্য সরকারও। তিনি বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে পরিবারকেই সময় দিতে চাইছি। তাই সাতক্ষীরা চলে এসেছি। আপাতত ক্রিকেট থেকে দূরেই থাকতে চাই।’
জাতীয় টেস্ট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম দলের সঙ্গে ইংল্যান্ড থেকে ফিরে আসেননি। স্ত্রীকে নিয়ে সেখানেই তিনি ঘুরছেন। তবে সূত্রে জানিয়েছে তিনি ঈদ করবেন দেশে পরিবারের সঙ্গে। তবে এবার বগুড়াতে নয়, ঢাকাতেই তার ঈদ করার সম্ভাবনা বেশি। এছাড়াও জাতীয় দলের তরুণ পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকায় ফিরে কিছুটা সময় কাটিয়ে চলে গেছেন গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায়। সেখানেই পরিবারের সঙ্গে ঈদ করবেন তিনি। এছাড়াও তাইজুল ইসলাম নাটোরে, কামরুল ইসলাম রাব্বি বরিশালে ঈদ করবেন বলে জানা গেছে।