নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্য সন্ত্রাসী হত্যাকান্ড ঘটেছে ১৫ মার্চ ২০১৯ দেশটির ক্রাইস্টচার্চের আল-নূর মসজিদে জুমার নামাজের আগ মূহুর্তে। যা গোটা বিশ্বকে ভাবিয়ে তুলেছে। আল-নূর মসজিদে হামলার এক সপ্তাহ পর আজ জুমার আজান সরাসরি সম্প্রচার করেছে দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যম।
সেই সাথে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে দেশটিজুড়ে আজ দুই মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়েছে। হামলার স্থান আল-নূর মসজিদে শোক প্রকাশে আজ হাজারো মানুষ সমবেত হন। প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্নও এতে যোগ দেন।
মসজিদটির ইমাম জামাল ফাওদা আজ তার খুৎবায় এক মর্মস্পর্শী ব্ক্তব্য দেন। তার সেই বক্ত্যে সংক্ষিপ্তাকারে তুলে ধরা হলো:-
গত শুক্রবার আমি এ মসজিদটিতে দাঁড়িয়েছিলাম। তখন এক সন্ত্রাসীর চোখেমুখে ঘৃণা ও ক্ষোভ দেখেছি। এতে অর্ধশত মুসল্লি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪২ জন। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের হৃদয়ে কষ্ট পেয়েছেন।
আজ একই স্থানে দাঁড়িয়ে যখন চারপাশে তাকিয়েছি, তখন নিউজিল্যান্ড ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার মানুষের চোখে ভালোবাসা ও সহানুভূতি দেখতে পেয়েছি। এতে আরও লাখ লাখ মানুষের হৃদয় ভরে গেছে, যারা আমাদের সঙ্গে এখানে শারীরিকভাবে নেই, কিন্তু আত্মীকভাবে আছেন।
সন্ত্রাসী আমাদের দেশকে শয়তানি মতাদর্শ দিয়ে ছিন্নভিন্ন করতে চেয়েছে, যা বিশ্ববাসীকে হতাশ করে দিয়েছে। কিন্তু এসব কিছু সত্ত্বেও আমরা দেখিয়ে দিয়েছি যে, নিউজিল্যান্ড হচ্ছে একেবারে অবিচ্ছেদ্য। বিশ্ব ভালোবাসা ও ঐক্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই নিউজিল্যান্ড।
আমাদের হৃদয় ভেঙে গেছে। কিন্তু আমরা ভেঙে পড়িনি। আমরা বেঁচে আছি। আমরা ঐক্যবদ্ধ। আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে, কাউকে আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হতে দেব না।
শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদের শয়তানি মতাদর্শ এই প্রথম আমাদের আঘাত হানেনি। কিন্তু এটি আমাদের কঠিন আঘাত দিয়েছে। এতগুলো লোককে হত্যা সাধারণ কিছু নয়। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের সংহতি অসাধারণ।
হতাহতদের পরিবারগুলোকে আপনাদের ভালোবাসা, তাদের মৃত্যুকে বিফলে যেতে দেয়নি। তাদের রক্ত আশার বীজে পানি ঢেলে দিয়েছে। তাদের মাধ্যমে বিশ্ববাসী ইসলামের সৌন্দর্য দেখতে পেয়েছেন। দেখতে পেয়েছেন আমাদের ঐক্যের সৌন্দর্যও।