ডিএমপি নিউজঃ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ক্যান্সার ও করোনা মহামারিতে বহুল ব্যবহৃত দেশী ও বিদেশী বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল ঔষধ এবং ঔষধ তৈরির সরঞ্জামসহ ০৭ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- তরিকুল ইসলাম, সৈয়দ আল মামুন, সাইদুল ইসলাম, মনোয়ার, আবদুল লতিফ, নাজমুল ঢালী ও সাগর আহমেদ মিলন। এ সময় তাদের হেফাজত হতে একমি কোম্পানির মোনাস-৭০০ বক্স, স্কয়ার কোম্পানির সেকলো-৫০ বক্স, জেনিথ কোম্পানির ন্যাপ্রোক্সেন প্লাস-৭৪৮ বক্সসহ অন্যান্য কোম্পানির বিপুল পরিমাণ নকল ঔষধ, ঔষধ তৈরির মেশিন, ডায়াস ও ঔষধের খালি বক্স উদ্ধার করা হয়।
গত ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ বুধবার ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানীর কাজলা, আরামবাগ ও মিটফোর্ড এলাকায় অভিযান করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১) বেলা ১১:০০ টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার, বিপিএম (বার)।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, একটি অসাধু চক্র নকল ঔষধ বাজারজাত করছে। এ চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। গত ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ বুধবার ধারাবাহিক অভিযানে করে এ প্রতারক চক্রের ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
ডিবি প্রধান বলেন, গ্রেফতারকৃত তরিকুল ইসলাম ও সৈয়দ আল মামুন কারখানা স্থাপন করে জীবন রক্ষাকারী এ সকল নকল ঔষধ তৈরি করে। সাইদুল ইসলাম এ নকল ঔষধ তৈরির প্রধান কারিগর, মনোয়ার এ্যালো এ্যালো ফয়েল ও আবদুল লতিফ ঔষধের পাতায় ছাপ দেয়ার গুরুত্বপূর্ণ উপাদানসহ সিলিন্ডার সরবরাহ করতো। গ্রেফতারকৃত নাজমুল ঢালী ঔষধের বক্সে ছাপ দেয়ার পর তৈরিকৃত এ সকল নকল ঔষধ গ্রেফতারকৃত সাগর আহমেদ মিলনের নেতৃত্বে মিটফোর্ডের কয়েকটি গ্রুপের মাধ্যমে বাজারজাত করা হতো।
তিনি আরো বলেন, এই সকল ঔষধ এর ইনগ্রিডিয়েন্টস এ মূলত প্রয়োজনীয় কোন সক্রিয় উপাদান থাকে না। এছাড়া মেইন স্টার্চ নিম্ন গ্রেডের ব্যবহৃত হয়। এমনকি স্টেরয়েড ও ডাই ব্যবহৃত হতে পারে। নন ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রেডের এসব কেমিক্যাল সেবনের ফলে মানুষের কিডনি, লিভার, হৃদযন্ত্র এর মারাত্নক ক্ষতি হতে পারে। এ সকল নকল ঔষধ সাধারণ মানুষের জন্য মরণ ফাঁদ।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ব বাজারে ১৪৫ টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের ঔষধ। ভেজাল এবং নকল ঔষধ এই সুনাম এবং আস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। মফস্বলের ঔষধ ফার্মেসিগুলোকে টার্গেট করে একটি অসাধু সংঘবদ্ধ চক্র সারাদেশে ভেজাল ও নকল ঔষধ ছড়িয়ে দিচ্ছে। এ ধরণের ওষুধ মাদকের চেয়েও ভয়াবহ।
এসময় তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, যদি কেউ আমাদের নকল ঔষধ কারখানা সমন্ধে অবগত করেন তাহলে আমরা কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
গ্রেফতারকৃতদেরকে বংশাল থানায় রুজুকৃত মামলায় বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করার পর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে।