আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে পেট ফুলে থাকে। ক্ষুধা লাগে না, এমনকি কিছু খেতেও ইচ্ছা করে না। মনে হয় পেট ভরা আছে। তবে খাবার না খাওয়ায় শরীর দুর্বল লাগে। মূলত আমাদের খাদ্যাভাসের কারণেই এ সমস্যা হয়।
আবারা ব্যায়াম বা শারীরিক কসরত না করলে, পানি কম খেলে বা খাবারে আঁশের পরিমাণ কম থাকলে পেটে গ্যাস তৈরি হতে পারে। এ ছাড়া হজম না হলেও পেটে বাধে গোলমাল। কিছু প্রাকৃতিক খাবার আছে, যা খেলে গ্যাসসহ পেটের অন্যান্য সমস্যায় উপকার মেলে।
আর এ সমস্যা দূর করতে আমরা বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেয়ে থাকি। এতে সাময়িক ভাবে ভালো লাগলেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয় থাকে। তাই চলুন জেনে নিই ঘরোয়া উপায়ে কীভাবে পেটে গ্যাস জমলে দূর করবেন-
কলা
আমরা সবাই কমবেশি কলা খাই। মূলত সকালে নাশতার টেবিলে বেশি দেখা যায় কলা। আর পেটের গ্যাস দূর করতে কার্যকরী ফল হলো কলা। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, যা প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড হিসেবে কাজ করে। তাই চেষ্টা করুন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে একটি কলা খেতে। এটি আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দ্রুত কমিয়ে আনবে।
মৌরি
মৌরি খুব দ্রুত গ্যাসের ব্যথা কমাতে কাজ করে। সে কারণে খাওয়ার পরে মৌরি চিবিয়ে খেতে হবে। এতে অ্যাসিড হওয়ার কোনো ভয় থাকে না। এ ছাড়া রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পরিষ্কার পানিতে মৌরি ভিজিয়ে ঢেকে রেখে দিন। পরদিন সকালে উঠে পানিটুকু ছেঁকে নিন। এবার সেই পানি খালি পেটে পান করুন। সারাদিন আর গ্যাসের সমস্যা হবে না। পেট ফুলেও থাকবে না।
আদা অথবা আদা চা
আদার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। এর অন্যতম উপকারিতা হলো এটি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে সহয়তা করে। মূলত আদা, খাবার দ্রুত হজম করতে সহায়তা করে। খাবার খাওয়ার একঘন্টা আগে আদা কুচি বিট লবণ দিয়ে খেলে উপকার পাবেন অথবা এক টুকরো তাজা আদার মূল পানিতে ফুটিয়ে আদা চা তৈরি করতে পারেন। আদা কিংবা আদা চা খাবার খাওয়ার আগে খেলে গ্যাসে পেট ফুলে থাকার সমস্যায় ভুগতে হবে না।
তুলসী পাতা
আমাদের পাকস্থলীতে শ্লেষ্মাজাতীয় পদার্থ উৎপাদন করে তুলসী পাতা। তাই তুলসী পাতার উপকার পেতে হলে নিয়মিত খেতে হবে এটি। চেষ্টা করুন সকালে চায়ের মধ্যে ২/৩টি পাতা দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে সে চা পান করতে। এতে দারুন উপকার পাবেন।
ঠান্ডা দুধ
এক গ্লাস ঠাণ্ডা, চর্বিহীন এবং চিনিহীন দুধ পান করলে অ্যাসিডিটি বা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সময় অনুভূত জ্বালাপোড়া থেকে তাৎক্ষণিক মুক্তি পাওয়া যায়। দুধে ক্যালসিয়াম রয়েছে যা কেবল অ্যাসিডকে নিরপেক্ষ করে না বরং এর উৎপাদনকেও বাধা দেয়।
চিয়া বীজ
চিয়া বীজে রয়েছে প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য। যা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের উপসর্গের চিকিৎসায় সাহায্য করে। এ ছাড়াও এটি ফাইবার এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। এগুলি ঠান্ডা পানীয়, স্মুদি, ফলের রস, দই, পোরিজ, পুডিং ইত্যাদিতে যোগ করা যেতে পারে (পানিতে ভিজিয়ে রাখার পরে)। এতে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তি পাবেন।
সবজি হিসেবে লাউ
লাউয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ল্যাক্সেটিভ উপাদান। সে কারণে এই সবজি নিয়মিত খেলে সকাল সকাল পেট পরিষ্কার হয়ে যায় সহজেই। যারা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্যই এই সবজি বড় দাওয়াই। পেট ব্যথা, পেট ফেঁপে থাকার মতো সমস্যা থেকে মেলে মুক্তি। তাই এ সব সমস্যায় যারা ভুগছেন নিয়মিত লাউ খাওয়ার অভ্যাস করুন।
এতে প্রচুর পরিমাণে ল্যাক্সেটিভ উপাদানও রয়েছে। সেই কারণে এই সবজি নিয়মিত খেলে সকাল সকাল পেট পরিষ্কার হয়ে যায় সহজেই। যারা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্যই এই সবজি বড় দাওয়াই। পেট ব্যথা, পেট ফেঁপে থাকার মতো সমস্যা থেকে মেলে মুক্তি। তাই এ সব সমস্যায় যারা ভুগছেন নিয়মিত পাতে লাউ রাখুন। সহজেই স্বস্তি মিলবে। তথ্যসূত্র : জাগোনিউজ