ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া শেষ পর্যন্ত জিতলো না কোনো দলই। এক টেস্টে কত না নাটক দেখা গেল! কখনও বৃষ্টির হানা, কখনও জোফরা আর্চারের আগুনের গোলা, কখনও মাথায় আঘাত নিয়েও স্টিভেন স্মিথের দলকে টেনে নেয়া। ঘটনাবহুল লর্ডস টেস্ট নিষ্পত্তি হলো ড্রয়ে।
কনকাশনের লক্ষণ (মাথায় বলের আঘাত লাগার পর) দেখা দেয়ায় টেস্টের চতুর্থ দিনই নিজেকে সরিয়ে নেন স্টিভেন স্মিথ। ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে কনকাশনের কারণে স্থলাভিষিক্ত হন মার্নাস লাবুসচাগনে, আর শেষ পর্যন্ত তার দুর্দান্ত প্রতিরোধেই টেস্টটা ড্র করতে সক্ষম হয় বিপদে পড়া অস্ট্রেলিয়া।
টেস্টের প্রথম দিনের পুরোটাই গিয়েছিল বৃষ্টির পেটে। বৃষ্টি যন্ত্রণা করেছে পরেও। তবে এমন এক টেস্টেও ফল বের করতে উঠেপড়ে লেগেছিল ইংল্যান্ড। তবে চতুর্থ ইনিংসে আর্চার-জ্যাক লিচদের তোপের মুখে পড়ে ২৬৭ তাড়া করার সাহস দেখায়নি অস্ট্রেলিয়া।
চতুর্থ দিনে ৭১ রানেই ৪ উইকেট হারানো ইংল্যান্ড শেষদিন শুরু করেছিল ৪ উইকেটে ৯৬ রান নিয়ে। সেখান থেকে দলকে ৫ উইকেটে ২৪৮ রানের ইনিংস ঘোষণা পর্যন্ত নিয়ে যান বেন স্টোকস। ১৬৫ বলে ১১ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কায় ১১৫ রানে অপরাজিত থাকেন এই অলরাউন্ডার।
চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ফের আর্চারের তোপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। এবার তার সঙ্গে যোগ দেন জ্যাক লিচ। আরও একবার ব্যর্থ ডেভিড ওয়ার্নার (৫)। ক্যামেরুন বেনক্রফট (১৫), উসমান খাজাও (২) ভরসা দিতে পারেননি। ৪৭ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে চোখে সর্ষে ফুল দেখছিল অসিরা। এর মধ্যে আবার নেই স্টিভেন স্মিথ। কি হবে, অজানা আশঙ্কা পেয়ে বসেছিল তাদের।
তবে স্মিথের স্থলাভিষিক্ত হওয়া লাবুসচাগনে হতাশ করেননি। চতুর্থ উইকেটে ট্রাভিস হেডের সঙ্গে ৮৫ রানের জুটিতে বিপর্যয় কাটিয়ে উঠেন এই ব্যাটসম্যান। ৫৯ করে তিনি লিচের শিকার হন। এরপর দ্রুত আরও দুটি উইকেট হারিয়ে ফেলে অস্ট্রেলিয়া।
তবে ট্রাভিস হেড একটা প্রান্ত ধরে ছিলেন। ৯০ বল খেলে ৪২ রানে থাকেন অপরাজিত। আর তাতেই ভয় কাটিয়ে ড্রয়ের স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়ে সফরকারিরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২৫৮
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ২৫০
ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: (আগের দিন ৯৬/৪) ৭১ ওভারে ২৫৮/৫ (ডি.)(স্টোকস ১১৫*, বাটলার ৩১, বেয়ারস্টো ৩০*; কামিন্স ১৭-৬-৩৫-৩, হেইজেলউড ১৩-১-৪৩-০, সিডল ১৫-৪-৫৪-২, লায়ন ২৬-৩-১০২-০)।
অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২৬৭) ৪৭.৩ ওভারে ১৫৪/৬ (ওয়ার্নার ৫, ব্যানক্রফট ১৬, খাওয়াজা ২, লাবুশেন ৫৯, হেড ৪২*, ওয়েড ১, পেইন ৪, কামিন্স ১*; ব্রড ৭-০-২৯-০, আর্চার ১৫-২-৩২-৩, ওকস ৩-০-১১-০, লিচ ১৬.৩-৫-৩৭-৩, স্টোকস ৩-১-১৬-০, রুট ১-০-৭-০, ডেনলি ২-২-০-০)।
ফল: ম্যাচ ড্র
সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজের দুটি শেষে অস্ট্রেলিয়া ১-০তে এগিয়ে
ম্যান অব দা ম্যাচ: বেন স্টোকস