গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, জলাবদ্ধতা থেকে নগরবাসীকে মুক্তির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। চট্টগ্রামের দুঃখ জলাবদ্ধতার সহসা স্থায়ী সমাধান হবে। এজন্য বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতার ‘স্থায়ী নিরসনে’ সরকার ছয় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের একটি বড় প্রকল্প হাতে নিচ্ছে বলে তিনি জানান। একই সাথে প্রকল্পটি ‘শিগগিরই’ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপন করার কথা তিনি বলেন। গত শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ‘নান্দনিক চট্টগ্রামের নন্দিত নাগরিক’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্পে রিভার ড্রাইভ নির্মাণ করে কর্ণফুলী নদীর খালগুলোর মুখে সুইস গেইট বসিয়ে পানি নিষ্কাশনের জন্য পাম্প হাউজ বসানো হবে। অতি দ্রুতই এ প্রকল্প একনেকে যাচ্ছে। টাকার অংকে এটি ছয় হাজার কোটি টাকার কম নয়। ‘টাকা নয়, চট্টগ্রামের মানুষের সমস্যা নিরসনই মুখ্য’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য মোশাররফ চট্টগ্রামকে ‘প্রকৃত নান্দনিক শহর’ হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারি সব সংস্থা বিশেষ করে সিডিএ, সিটি করপোরেশন ও ওয়াসার সমন্বিত কাজের ওপর গুরুত্ব দেন।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ সালাম, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, বিএফইউজের সহ-সভাপতি শহীদ উল আলম, যুগ্ম মহাসচিব তপন চক্রবর্তী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির সভাপতি স্বপন কুমার মল্লিক, প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী আবুল মনসুর, যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, অর্থ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক প্রমূখ।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর এই ৮ বছরে বাংলাদেশে অকল্পনীয় উন্নয়ন হয়েছে। যার প্রমাণ এই বছরে সবচেয়ে বড় বাজেট ঘোষণা। বাজেট নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করেছেন কিন্তু সেই সরকারই বড় বাজেট ঘোষণা করে যার অর্থনীতি ভিত খুব শক্ত। প্রধানমন্ত্রীর সাহস আছে, যিনি বিশ্বব্যাংক থেকে কোনো টাকা নেননি। নিজের অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরি করছেন। আমরা এখনো বিশ্বব্যাংক থেকে টাকা নিইনি।
বাংলাদেশের উন্নয়নের খবর এখন বিশ্বনেতাদের কাছেও পৌঁছে গেছে। প্রধানমন্ত্রী যখন বাইরে যান তখন বিশ্বনেতারা জিজ্ঞেস করেন ‘হোয়াটস ইজ ইউর মিরাক্যাল? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৬৪২ ডলার। সেই মাথাপিছু আয় এখন ১ হাজার ৬০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। শুধু তাই নয় একসময় ৩ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল। সেটি এখন ১৬ হাজার ৪০০ মেগাওয়াটে পৌঁছেছে। তিনি বলেন, নাগরিক হিসেবে আমাদের কিছু দায়িত্ব রয়েছে। আমরা যে পরিকল্পনা করি তা মানি না। ভবন নির্মাণের জন্য পাঁচ ফুট জায়গা ছাড়ার নিয়ম থাকলেও কেউ তা মানে না।
তিনি চট্টগ্রামে কর্মরত সাংবাদিকদের আবাসনের জন্য নগরীতে ‘সাংবাদিক পল্লী’ করে বিশেষ ব্যাংক ঋণ সুবিধায় ফ্ল্যাট বরাদ্দের ঘোষণা দেন ।