ডিএমপি নিউজ: নগদ টাকা ও ডকুমেন্টস উদ্ধারসহ মতিঝিলে চাঁদাবাজি করার সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মচারীসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে-গৌতম ভট্টাচার্য, হাবিবুর রহমান, পরিতোষ মন্ডল ও মো: এসকেন আলী খান। এসময় তাদের হেফাজত থেকে মিষ্টির ৪টি প্যাকেটে নগদ দেড় লক্ষ টাকা, ৪টি মোবাইল, দুদকের মনোগ্রাম সম্বলিত খাকি রঙের ১টি খাম ও দুদকের একটি নোটিশ উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে গৌতম ভট্টাচার্য দুদকের ডিজি মানি লন্ডারিং এর পিএ হিসেবে কর্মরত, বাড়ি মৌলভীবাজার। এসকেন আলী খান চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য, বাড়ি গোপালগঞ্জ। অপর দুইজন গোপালগঞ্জের বাসিন্দা এবং পেশাগত ভাবে দালাল ও প্রতারক।
গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের স্পেশাল অপারেশন টিম তাদেরকে গ্রেফতার করে ।
আজ শনিবার সকাল ১১:৩০টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
তিনি বলেন, রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকার ব্যবসায়ী আশিকুজ্জামান। জুন মানের ২০ তারিখ সকালে আশিকুজ্জামানের উত্তরার বাসায় দুদুকের মনোগ্রাম সম্বলিত খাকি রঙের খামে ১টি নোটিশ নিয়ে একজন অফিসার হাজির হয়। কার্পেটের ব্যবসার আড়ালে স্বর্ণের চোরাচালান এবং মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগ তুলেন আশিকুজ্জামানের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ শুনে ভয় পেয়ে যান আশিকুজ্জামান। তখন দুদকের সে অফিসার আশিকুজ্জামানকে একটু সহানুভূতি দেখানোর ভান করে। তখন তাকে মোবাইল বন্ধ করে দিয়ে আত্মগোপনে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। ভয় দেখায় ডিবি, সিআইডি, বাংলাদেশ ব্যাংক, দুদক এবং এনএসআই দুর্নীতি সংক্রান্ত বিষয়ে তাকে খুঁজছে। দুদকেও তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি অভিযোগ আমলে নেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেতে চক্রটি ভুক্তভোগীকে মিষ্টির প্যাকেটে টাকা নিয়ে মতিঝিলের একটি হোটেলে আসতে বলে। এ বিষয়ে আগে থেকে গোয়েন্দা নজরদারি চালাচ্ছিল গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগ। পরে দাবি করা টাকা নিতে হোটেলে আসলে তাদের গ্রেফতার করে ডিবি স্পেশাল অপারেশন টিম।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, মূলহোতা গৌতম ভট্টাচার্য কর্ম সূত্রেই জানে দুর্নীতি সংক্রান্তে কীভাবে মানুষকে নোটিশ পাঠাতে হয়। কীভাবে তাদের কাছ থেকে আত্মপক্ষ সমর্থনমূলক ব্যাখ্যা নেয়া হয় এবং কীভাবে অভিযোগ গঠন করা হয়। এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সে তার দুষ্কর্মের সহযোগীদেরকে দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ী, শিল্পপতি এবং চাকুরীজীবীকে টার্গেট করতো। তাদের ব্যক্তিগত নানা তথ্য সংগ্রহ করে দুদকের চিঠির খামে, প্যাড ও ফরমেট ব্যবহার করে অভিযোগের নোটিশ পাঠাতো। পরবর্তীতে অভিযোগের দায় হতে অব্যাহতি দান ও সমঝোতার নামে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় মামলা রুজু হয়েছে।