চাকরি প্রত্যাশিদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে দুইজন অপহরণকারীকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির ভাষানটেক থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো-অপহরণকারী চক্রের মোঃ জাহিদ হাসান (২৪) ও সাজেদা বেগম (৫০)। এ ঘটনায় মুক্তিপণের চার লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
জিম্মি করে মারধর ও চাঁদা আদায়ের অভিযোগে শনিবার (১৯ অক্টোবর ২০২৪ খ্রি.) বাদী মাকসুদা (২৭) এর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডিএমপির ভাষানটেক থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু হয়।
মামলার সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে মোছাঃ নাইমা (২৬) নামের একজনের সাথে খিলগাঁও এলাকার ভিকটিম মাকসুদার ফেসবুকে পরিচয় হয়। ভিকটিম মাকসুদার একটি চাকরির প্রয়োজন থাকায় নাইমা জানায় ভাষানটেকের এক্সট্রিম প্রাইভেট কোম্পানির এমডির সাথে তার ভালো পরিচয় আছে। নাইমা তাকে বলে একটা ভালো পোস্টে চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে পারবে। তার কথা বিশ্বাস করে মাকসুদা গত ১৪ অক্টোবর ২০২৪ রাত আনুমানিক ০৮:০০ টায় ভাষানটেকের মজুমদার মোড়ে আসে। সেখান থেকে নাইমা ভিকটিমকে এমডির সাথে সাক্ষাত করানোর জন্য একটি বাসায় নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর আরো কয়েকজন এসে ভিকটিমের ফোনটি নিয়ে নেয় এবং একটি কক্ষে আটকে রাখে। পরদিন তারা ভিকটিমকে মারধর করে বিকাশ অ্যাকাউন্টের পিন নাম্বার নিয়ে এক লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা উঠিয়ে নেয়। তারা ভিকটিমকে মারধর করে এবং আরো টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। ভিকটিম জীবন বাঁচানোর জন্য তার বাসার চাবি দিয়ে দেয়। পরে তারা ভিকটিমের বাসার চাবি নিয়ে তার বাসা থেকে একটি স্বর্ণের চেইন, একটি ব্রেসলেট, একটি ডায়মন্ডের রিং সহ বেশকিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ সাত লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আসে। এরপরও আরো টাকার জন্য ভিকটিমের মোবাইল দিয়ে তার মা ও ভাইদেরকে চাপ দিতে থাকে। ভিকটিমের দুই ভাই এনামুল হক ও সাইফুল ইসলাম ঘটনাটি ডিএমপির ভাষানটেক থানাকে জানায়। ভাষানটেক থানা পুলিশ ১৮ অক্টোবর রাত আনুমানিক ১১:৪০ টায় ভাষানটেকের বাসা নং-৮/২, ফ্ল্যাট নং-৯/সি, স্বপ্না বিলাসের ভিতর থেকে অপহৃত ভিকটিমকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে। এ ঘটনায় অপহরণকারী চক্রের মোঃ জাহিদ হাসান (২৪) এবং সাজেদা বেগম (৫০) নামের দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। ওই বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় মুক্তিপণে আদায় করা নগদ চার লক্ষ টাকা। মামলার অপর আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যহত আছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত দুইজনসহ পলাতক অন্যান্যরা সংঘবদ্ধ প্রতারক ও অপহরণ চক্রের সদস্য। তারা ফেসবুক ও হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে চাকরি প্রত্যাশিদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অপহরণ করে। পরবর্তী সময়ে জিম্মি রেখে শারীরিক অত্যাচার ও জীবন নাশের হুমকি দিয়ে মোটা অংকের টাকা আদায় করে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে এমন ঘটনায় একাধিক মামলার তথ্য পেয়েছে থানা পুলিশ।