কথায় কথায় আমরা মাঝে মধ্যে এমন কিছু শব্দ ব্যবহার করে থাকি যার প্রকৃত অর্থ না বুঝলে এর ভাবার্থ আমরা ঠিকই বুঝি। আবার অনেক ক্ষেত্রে না বুঝে ও এমন একটা ভাব নেই যেন সব বুঝি। তবে বর্তমান জামানায় ভাব নেওয়াটা দোষের কিছু নয় বরং এটাও একটা স্টাইল!
এবার আসি আসল কথায়, চলতে পথে আমরা একটা শব্দ (মরীচিকা) হর-হামেশাই ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু মরীচিকা মানে কী? কিংবা এটা কি দেখা যায়?
মরীচিকার সহজ বাংলা হল দৃষ্টিভ্রম। এবং এটা দেখা ও যায়। তবে যদি চিন্তা করে থাকেন যে, সব জায়গা থেকে দেখা যায় সেটা ভুল। কারোও যদি প্রত্যেক্ষভাবে এটা দেখার বাসনা থেকেই থাকে তাহলে দিনের বেলায় তাকে যেতে হবে উত্তপ্ত মেরু অঞ্চল বা শীতপ্রধান মেরু অঞ্চলে।
এখন প্রশ্ন হল, এর রহস্য কী? বিজ্ঞানের ভাষায় মরীচিকা হচ্ছে আলোর পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলনের ফল। আলোকরশ্মি যখন ঘন মাধ্যম থেকে হালকা মাধ্যমে প্রবেশ করে তখন প্রতিসরণের দরুণ অভিলম্ব থেকে দূরে সরে যায়। আর আলো যখন ক্রান্তি কোণের চেয়ে বড় মানের কোণে বিভেদতলে আপতিত হয় তখন প্রতিসরিত না হয়ে প্রথম মাধ্যমেই ফিরে আসে। আর এভাবেই ঘটে পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন। আর এর ফলেই সৃষ্টি হয় মরীচিকার। ছবি ও সূত্রঃ উইকিপিডিয়া।
মরুভূমিতে সূর্যের প্রচন্ড তাপে বালি খুব তাড়াতাড়ি উত্তপ্ত হয়। ফলে বালি সংলগ্ন বায়ুর তাপমাত্রা অনেক বেশি হয়। ভূ-পৃষ্ঠ থেকে যত উপরের দিকে যাওয়া যায় তাপমাত্রা কমতে থাকে। এখন মরুভূমিতে অবস্থিত কোন বস্তু থেকে আলোক রশ্নি পথিকের চোখে আসার সময় ঘনতর মাধ্যম হতে লঘুতর মাধ্যমে প্রবেশ করে থাকে। একসময় আলোক রশ্নি প্রতিসরণ না হয়ে সম্পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন হয় এবং আলোক রশ্নি বাঁকা পথে পথিকের চোখে আসবে। তাই ঐ স্থানে পথিক একটি প্রতিবিম্বের অস্তিত্ব অনুভব করবে। এবং ঐ স্থানে পানির অস্তিত্ব আছে বলে ভুল করবে।
অথার্ৎ মরীচিকার মানে দৃষ্টিভ্রম, এটাই সহজ! এখন কেউ যদি অলৈাকিকভাবে এটা দেখতে পায় তা একান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার!