সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পৃথিবীর প্রতিবেশি গ্রহ মঙ্গলে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা (NASA), রুশ গবেষণা সংস্থা রসকসমস (Roscosmos), ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা ইসা (ESA), চীনের স্পেস এজেন্সী (CNSA) এবং ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO) অভিযান চালিয়েছে। এছাড়াও বাইরের দেশের সহযোগিতায় সৌদি আরবও মঙ্গলে কৃত্রিম শহর তৈরির পরিকল্পনা করছে।
প্রতিটি দেশই লাল গ্রহে নিজেদের আধিপত্য গড়তে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। রোবট যান পাঠিয়ে মঙ্গলের খুঁটিনাটি তথ্যও সংগ্রহের কাজ চলছে। এমন অবস্থায় পিছিয়ে থাকতে চাইছে না এশিয়ার অন্যতম শক্তিমান দেশ জাপানও। তাদের অভিযান অবশ্য সরাসরি মঙ্গলে নয়, বরং লাল গ্রহের দুটি চাঁদ ফোবোস এবং ডিমোস’এ চালানো হবে। সম্প্রতি জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা Japanese Aerospace Exploration Agency (JAXA) ব্যতিক্রমী অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছে।
২০২০ সাল নাগাদ জাপান মঙ্গলের উপগ্রহ দুইটিতে রোবট যান পাঠাবে। সেখান থেকে তথ্য ও ছবি সংগ্রহের পর তা পৃথিবীতে ফেরত এনে গবেষণা করা হবে। এ প্রসঙ্গে আইএসএএস (Institute of Space and Astronautical Science) এর গবেষক মাসাকি ফুজিমোতো জানান, প্রথম অভিযানে মঙ্গলের চাঁদ ফোবোস’র ভূপৃষ্ঠ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হবে। দেখা হবে এর উৎপত্তির পেছনে গ্রহাণুর আঘাত দায়ি কিনা। পাশাপাশি ডিমোস’এও অভিযান চালিয়ে ছবি সংগ্রহ করা হবে।
জাপানের রোবট যান এমএমএক্স (martian moons exploration) মঙ্গল গ্রহের চাঁদ দুইটির আবহাওয়া খতিয়ে দেখবে। বায়ুমণ্ডলে ধুলো, মেঘ এবং ধোঁয়ার প্রকৃতিও জানার চেষ্টা চলবে। মঙ্গলের সঙ্গে ফোবোসের দূরত্ব মাত্র ৬০০০ কিলোমিটার। যেখানে পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব ৩ লাখ ৮৪ হাজার কিলোমিটার।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, কম দূরত্বের কারণে মঙ্গলের সঙ্গে ফোবোসের সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। মঙ্গলের অভিকর্ষ টান বেশি হওয়ায় ক্রমেই কাছে চলে আসছে ফোবোস। প্রতি ১০০ বছরে মঙ্গলের সঙ্গে ফোবোসের দূরত্ব ২ মিটার করে কমে যাচ্ছে। দিন দিন এর পরিমাণ আরো বাড়ছে।
ফলে মঙ্গলে বসতি স্থাপনের জন্য ফোবোস হুমকি হয়ে উঠবে কিনা সেটিও জানার চেষ্টা করবে জাপানের মহাকাশ সংস্থা।