বর্তমানে যুদ্ধংদেহী অবস্থানে রয়েছে দুই উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। পরমাণুশক্তির অধিকারী কিমের দেশকে চরম শিক্ষা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশটির ওপর কঠোর বাণিজ্য ও আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপও হয়েছে। কিন্তু বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে যার অর্থনীতি সবচেয়ে কম বাণিজ্য-নির্ভর, তাকে এভাবে শায়েস্তা করার চেষ্টায় কতটা ফল আসবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতির অবস্থা আসলে কেমন? এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া খুব কঠিন। কেননা, দেশটি কখনো তাদের বাণিজ্যের পরিসংখ্যান জানায় না। তেমনি জানায় না এর সম্পদের পরিমাণ। তবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বরাতে তাদের আয়ের উৎস সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা পাওয়া যায়।
১. চীনের সঙ্গে আমদানি-রফতানি:
উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে ঘনিষ্ট বন্ধু প্রতিবেশী চীন। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে বড় সহায়তাকারী ও বৃহৎ বাণিজ্য সহযোগীও চীন। চীন কয়লা, খনিজদ্রব্য, পোশাক ও কিছু খাদ্য সামগ্রী দেশটি থেকে আমদানি করে থাকে। আর উত্তর কোরিয়া চীন থেকে পেট্রোলিয়াম গ্যাস, ইস্পাত, যন্ত্রাংশ, গাড়ি ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী কিনে থাকে।
২. কেসং শিল্পাঞ্চল:
সীমান্তবর্তী কেসং শিল্পপার্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে হাজার কোটি ডলারের মতো আয় করেছে উত্তর কোরিয়া। উত্তর কোরিয়া এই শিল্পপার্ক থেকে অর্জিত অর্থ পরমাণু অস্ত্র বানাতে ব্যয় করছে—এটাই দক্ষিণ কোরিয়ার অভিযোগ। তবে উত্তর কোরিয়া সত্যিই ওই অর্থ পরমাণু অস্ত্র বানাতে ব্যবহার করছে কি না, সে বিষয়ে পর্যাপ্ত কোনো তথ্য দেয়নি দক্ষিণ কোরিয়া।
৩. জনশক্তি রপ্তানি:
উত্তর কোরিয়া বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ২০০০ সালের পর থেকে দেশটি বিদেশে জনশক্তি রপ্তানিতে নামে। আর এখন দেশটির আয়ের বড় উৎস এটি। কোরিয়া ট্রেড-ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন এজেন্সির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের অন্তত ৪০টি দেশে ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ উত্তর কোরীয় কর্মী আছে। উত্তর কোরিয়ার শ্রমিকেরা মূলত রাশিয়া, চীন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের রেস্তোরাঁ ও নির্মাণ খাতে কাজ করছেন।
৪.পর্যটন শিল্প:
উত্তর কোরিয়ার আয়ের একটি ক্রমবর্ধমান উৎস পর্যটন খাত। প্রতিবছর দেশটিতে প্রায় এক লাখ পর্যটক আসেন। এর বেশির ভাগই চীনের পর্যটক। মাঝেমধ্যে উত্তর কোরিয়া দেশে আসা পর্যটকদের গুপ্তচরবৃত্তির সন্দেহসহ নানা অভিযোগে আটক করে। এরপরও এ শিল্পটি এগোচ্ছে।