ভারতীয় ফাস্ট বোলার আশিষ নেহরা ক্রিকেটের ১৯ বছরের ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘটালেন গতকাল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-২০ ম্যাচ জয় দিয়ে।
এ দিন তাঁর নামে বোলারদের একটা প্রান্তেরই নামকরণ করা হল। ‘আশিস নেহরা প্রান্ত’। ইডেনে যেমন আছে প্যাভিলিয়ন প্রান্ত বা হাই কোর্ট প্রান্ত।
এমন অভিনব সিদ্ধান্ত দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার। ঘরের মাঠে বিদায়ী আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন নেহরা। যাঁকে ‘নেহরাজি’ বলেই ডাকেন অনেক ক্রিকেটার।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোনও বোলারের নামে একটি প্রান্তের নামকরণ হওয়ার এটা দ্বিতীয় উদাহরণ। এর আগে ইংল্যান্ডের জেমস অ্যান্ডারসনের ভাগ্যে একই সম্মান জুটেছে। দিল্লিতে ঘরের মাঠে নেহরা যে তাঁর জীবনের শেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ খেলবেন, সেই ইচ্ছা আগে থেকেই প্রকাশ করেছিলেন। সেই কারণেই নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে তাঁকে রাখা হয়। নেহরা অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি কোনও ধরনের ক্রিকেটেই আর খেলবেন না।
এ দিন ম্যাচ শুরুর আগে ভারতীয় দলের পক্ষ থেকেও বিদায়ী সংবর্ধনা জানানো হয় নেহরাকে। তার পর আবেগপূর্ণ ভাবে বিরাট কোহালি বলে যান, ‘‘ফাস্ট বোলার হিসেবে উনিশ বছর খেলে যাওয়াটা একটা বিরাট প্রাপ্তি। সবচেয়ে চতুর ক্রিকেটারদের একজন নেহরা। সবচেয়ে যেটা ভাল ব্যাপার, তা হচ্ছে, তরুণ ক্রিকেটারদের সব সময় সাহায্য করতে প্রস্তুত ছিল ও।’’ বেড়ে ওঠার পথে দিল্লির হয়েই কোহালি প্রচুর ক্রিকেট খেলেছেন নেহরার সঙ্গে। ভারত অধিনায়ক বলে ফেললেন, ‘‘ওকে ক্রিকেট ছাড়তে দেখাটা কষ্টের। কিন্তু ঘরের মাঠে ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে পারছে এটা নিশ্চয়ই ওর কাছে সুখকর।’’ ম্যাচ শুরুর আগে টিমের দুই সবচেয়ে সিনিয়র ক্রিকেটার কোহালি এবং মহেন্দ্র সিংহ ধোনি তাঁর হাতে তুলে দিলেন বিশেষ স্মারক। কোহালির মতোই ধোনির অধিনয়াকত্বেও প্রচুর ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ২০১১-তে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপজয়ী ধোনি ব্রিগেডের সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯৯-তে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে কলম্বোর টেস্ট ম্যাচে তিনি যখন অভিষেক ঘটিয়েছিলেন, ভারতের অধিনায়ক ছিলেন মহম্মদ আজহারউদ্দিন। তার পর নেহরা খেলেছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের অধিনায়কত্বেও। ২০০৩ বিশ্বকাপে ডারবানে ইংল্যান্ডকে হারানোর মূলে ছিল নেহরার সেই বিষাক্ত সুইং বোলিং। সে দিন ছয় উইকেট নিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন ইংল্যান্ডকে।
বোর্ডের ওয়েবসাইটে দেওয়া একটি ভিডিওতে রোহিত শর্মা, শিখর ধবন, ভুবনেশ্বর কুমার, দীনেশ কার্তিক, অজিঙ্ক রাহানে-রা তাঁর সম্পর্কে বলে গেলেন। যদিও টানা চোট-আঘাতের জন্য বারবার ধাক্কা খেয়েছে তাঁর কেরিয়ার। ১৭টি টেস্ট খেলে ৪৪ উইকেট পেয়েছেন নেহরা। ১২০টি একদিনের ম্যাচ থেকে পেয়েছিলেন ১৫৭ উইকেট। টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিকে ২৬ ম্যাচে রয়েছে ৩৪ শিকার