ডিএমপি নিউজঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের এই শুভ মুহূর্তে আমি টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববাসীকে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী সোমবার (২২ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে আয়োজিত মুজিব চিরন্তন শীর্ষক ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার ষষ্ঠ দিনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। আজকের অনুষ্ঠানের প্রতিপাদ্য ‘বাংলার মাটি আমার মাটি’।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এমন একটি অঞ্চলে বাসবাস করি যা প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকা হিসেবে বিবেচিত। হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত দেশগুলো যেমন ভূমিকম্প, ক্লাউড ব্রাস্ট, বরফ ধস, ভূমিধস, ফ্লাস ফ্লাড বা আকস্মিক বন্যা ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ, তেমনি বাংলাদেশের মত সাগর-উপকূলবর্তী অঞ্চলসমূহ বারবার বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিকম্প, অতিবৃষ্টি বা খরার মত দুর্যোগের সম্মুখীন হয়।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, জলবায়ুর পরিবর্তন আমাদের এ উপমহাদেশের দেশগুলোকে সবচেয়ে বেশি নাজুক করে তুলেছে। জলবায়ু পরিবর্তনে আমাদের অবদান না থাকলেও আমরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। আমরা অভিযোজনের মাধ্যমে সাময়িকভাবে নিজেদের রক্ষা করতে পারি, কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের বর্তমান ধারা বন্ধ করা না গেলে অভিযোজন প্রক্রিয়া দীর্ঘস্থায়ী সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম বা সিভিএফ-এর বর্তমান সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ব নেতৃত্বকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে আসছে। গত বছর ঢাকায় গ্লোবাল ক্লাইমেট অ্যাডাপটেশন, বাংলাদেশ অফিস চালু করা হয়েছে। ঢাকা অফিস দক্ষিণ এশিয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবজনিত ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় কাজ শুরু করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সব সময়ই শোষিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির জন্য লড়াই করেছেন। মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে তিনি ছিলেন সোচ্চার। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবে। সকলের অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-চিকিৎসা-শিক্ষার মত মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হবে। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকেরা সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশের অগ্রগতি থেমে যায়। বিগত ১২ বছরে আমরা জাতির পিতার দেখানো পথ ধরেই হাঁটছি। আর্থ-সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। গত মাসে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছে।
তিনি আরও বলেন, এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে দক্ষিণ এশিয়ার এক বিশাল সংখ্যক মানুষ এখনও দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাস করে। বিপুল সংখ্যক মানুষ এখনও অর্ধাহারে বা না খেয়ে প্রতিরাতে ঘুমাতে যায়। অনেকে জীবন ধারণের ন্যুনতম সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। দক্ষিণ এশিয়ায় যে প্রাকৃতিক সম্পদ আছে সেই সম্পদ যথাযথভাবে ব্যবহার করে এ অঞ্চলের মানুষের দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব। একে অপরের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে এ অঞ্চলকে দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়াস আমরা অব্যাহত রাখব।