ডিএমপি নিউজঃ মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে আলাদা। এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে অথবা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) ও ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ এবং জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়।
১. সাধারণত ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এ লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর এবং তা দুই থেকে সাত দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা।
৪. জ্বরের পাশাপাশি সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা সঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব কিংবা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ কিংবা লাল দানা দানা দেখা দেয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ কিংবা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে কিংবা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। অন্যদিকে
জ্বরের প্রথম তিন দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অন্যদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান এবং বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে কিংবা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়-
১. বাড়ির আশপাশ যতটা সম্ভব পরিষ্কার রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব কিংবা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন এবং ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত তিন বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম রাখতে পারেন সঙ্গে।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করতে পারেন।
৬. যেখানে সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অন্যদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির পাশাপাশি ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলা ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
আপনার আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখলে এবং ছোট ছোট কিছু বিষয়ে সচেতন থাকলে ডেঙ্গুজ্বর থেকে যেমন মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে তেমনি আপনার আশপাশের মানুষরাও থাকবে সুস্থ এ সময়ের রোগবালাইয়ের প্রকোপ থেকে।