দক্ষিণ কোরীয় প্রধানমন্ত্রী লি নাক-ইয়ন তিন দিনের সরকারি সফরে শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ পৌঁছেছেন। বিমানবন্দরে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে।দু ’দেশের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্ককে আরো জোরদার করতে ও নতুন বাণিজ্যিক ও বিনিয়োগের সন্ধানে তার এই বাংলাদেশ সফর।
একটি বিশেষ ফ্লাইটে দক্ষিণ কোরীয় প্রধানমন্ত্রী বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেন। বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবুল মোমেন।
কোরীয় প্রধানমন্ত্রী বিমানবন্দরে পৌঁছুলে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে গার্ড অব অর্নার প্রদান করে। এরপর অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে কোরিয়া ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়।
অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের পর কোরীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের উদ্দেশে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। লী তার চার দেশ সফরের প্রথমভাগে বাংলাদেশে এসেছেন। তিনি ১৩ থেকে ২১ জুলাই এই সফর করবেন। বাংলাদেশের পর তিনি তাজিকিস্তান, কিরগিজিস্তান ও কাতার সফরে যাবেন।
কোরীয় প্রধানমন্ত্রীর অফিসের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে খবরে বলা হয়, ‘সিউলের বহুমুখী কূটনৈতিক কৌশলের আওতায় মধ্য ও দক্ষিণপশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোর সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার এবং মধ্যপ্রাচ্যে কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে লী এই সফর করছেন।’
দক্ষিণ কোরীয় প্রধানমন্ত্রী আজ সন্ধ্যায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ঢাকায় কোরীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সাথে এক নৈশভোজে অংশ নিবেন। সফরকালে তিনি এই হোটেলেই থাকবেন। দক্ষিণ কোরীয় প্রধানমন্ত্রী রোববার সকালে সাভারে জাতীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবকের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তার এই সরকারি সফরের কার্যক্রম শুরু করবেন।
এরপর তিনি সাভার ইপিজেড এ ইয়াংওয়ান হাইটেক স্পোর্টসওয়্যার ও ঢাকার মুগদাপাড়ায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এডভান্স নার্সিং এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ- এ পরিদর্শন করবেন। একই দিন বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে কোরীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে (পিএমও) এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে, দুপুরে লী ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এফবিসিসিআই ও কেআইটিএ আয়োজিত বাংলাদেশ- কোরিয়া বিজনেস ফোরামে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করবেন। শেখ হাসিনার সাথে বৈঠকের পর কোরীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের সঙ্গে দেখা করবেন। সন্ধ্যায় তিনি হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আয়োজিত এক নৈশভোজে যোগ দিবেন।
সোমবার ঢাকা ছাড়ার আগে, কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পূষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বেলা ১১টায় হজরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানাবেন। কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী একটি বিশেষ ফ্লাইটে তাজাকিস্তানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রীর আগমনের আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা নতুন পণ্য উৎপাদন করার জন্য তাদের (কোরিয়ান) বিনিয়োগের সন্ধান করবো, কারণ বৈচিত্র্যপূর্ণ পণ্য উৎপাদনে তাদের রয়েছে যথেষ্ট উদ্ভাবনী শক্তি।’