বাংলাদেশের প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) গত এক দশকের বেশি সময় একাডেমিক প্রাপ্তির ধারাবাহিকতায় নারী উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এখানে গত দশক ধরে শিক্ষাগত দিক দিয়ে নারী শিক্ষার্থীরাই প্রাধান্য বজায় রেখেছে।
প্রতি বছর ঢাবি’র বিভিন্ন ফ্যাকাল্টির ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যাচেলর পরীক্ষায় চমৎকার ফলাফলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সম্মাননা ডিনস্ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এই সম্মাননা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নারী এগিয়ে রয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ গত দশ বছর যাবত জীব বিজ্ঞান বিভাগের পুরস্কারপ্রাপ্ত মোট ৫৯৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৯৮ জন (৬৬ শতাংশ) নারী।
বিভিন্ন গুণমান যাচাইয়ের পর বিশেষত কোনো প্রকার ফলোন্নয়ন পরীক্ষা ব্যাতিরেকে সিজিপিএ-এর গড়পরতা ৩ দশমিক ৭৫ ঠিক রাখার গ্রাজুয়েটরা এই সম্মাননার জন্যে বিবেচিত হয়। ২০০৭ সালের ১০ বছর আগের দিকে তাকালে দেখা যাবে জীব বিজ্ঞানে অনার্স পরীক্ষায় মোট ৭১ জন ডীন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। এর মধ্যে ৩৫ জন নারী শিক্ষার্থী (৪৯ শতাংশ)।
২০০৮ সালের চিত্র পরিবর্তিত, সেখানে ৪৮ থেকে ৪১ জন পুরুষ শিক্ষার্থী ডীন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে।
২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত নারী শিক্ষার্থীর শতকরা হার যথাক্রমে, ৮৪,৬০, ৭৯,৭২, ৭০, ৭৬, ৬৮ ও ৭০ শতাংশ।
২০০৭ সালের ৬ ডিসেম্বর উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ৫৭ জন নারী অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তদের অন্যতম রহিমা খাতুন। তিনি সিজিপিএ ৪ দশমিক ০০-এর মধ্যে ৩ দশমিক ৮৬ পেয়ে সম্মাননা পেয়েছেন। ওই বছর ২৪ শতাংশ পুরুষ শিক্ষার্থীরা সম্মাননা পেয়েছেন।
রহিমা বলেন, নিয়মিত অধ্যবসায় ও ক্লাসে যথাযথ মনোনিবেশ করেই তিনি লক্ষ্যে পৌঁছতে পেরেছেন।
২০১৭ সালের ১৮ অক্টোবর ব্যবসা শিক্ষা ফ্যাকাল্টি ডীনস্ অ্যাওয়ার্ড-২০১৭ আয়োজন করে। এখানে পুরস্কারপ্রাপ্ত ৯৪ জন মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫০ জন নারী। অর্থাৎ শতকরা ৫৩ শতাংশ নারী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন নারী শিক্ষার্থীদের এই প্রাপ্তির নেপথ্যে বর্তমান সরকারের নারীর ক্ষমতায়নে চলমান কার্যক্রম প্রশংসার দাবিদার।
ঢাবি’র সাবেক উপাচার্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাজারো নারীদের রোল মডেল, যিনি উচ্চ শিক্ষা লাভে যথোপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির জন্যে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে উচ্চ শিক্ষা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নারী শিক্ষার্থীদের কোনো সমস্যার সন্মুখীন হতে না হয়।