দেশীয় তৈরি একটি এলজিসহ একজন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতের নাম মোঃ খায়রুল ইসলাম(২৮)। এ সময় পুলিশ ছিনতাইকৃত একটি লেনেবো ল্যাপটপ উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও জব্দ করেছে পুলিশ।
চট্টগ্রাম গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০ মার্চ, ২০১৮ সুমন রানা ও তার ক্লাসমেট অফিসের ইর্ন্টানি ডিউটি শেষে সন্ধ্যা অনুমান ০৭.৩০ টায় নগরীর ২নং গেইট হতে রিক্সা যোগে দেওয়ানহাট এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। রাত্র অনুমান ০৮.০০ টায় তাদের রিক্সাটি ওয়াসার মোড় অতিক্রম করে পিটস্টপ এর দক্ষিণ পাশে ফ্লাইওভার এর রান আপের মুখে রাস্তায় আসিলে হঠাৎ মোটর সাইকেল যোগে ২জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি রিক্সার বাম পাশে এসে রিক্সার গতিরোধ করে তাদের হাতে থাকা ল্যাপটপ ব্যাগ জোর পূর্বক ছিনাইয়া নেয়।
তাৎক্ষণিক ছিনাইয়া নেওয়ার পর রিক্সায় থাকা মহিলা যাত্রী রাস্তার উপর পড়ে যায়। উক্ত বিষয়টি পিছনে মোটর সাইকেলে দামপাড়া পুলিশ লাইনের দিক থেকে আসা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই/আব্দুর রব দেখার পর মোটরসাইকেল যোগে ছিনতাইকারীর মোটরসাইকেলের পিছু ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে কোতোয়ালী থানার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট এর সামনে ছিনতাইকারীর মোটরসাইকেলটি কৌশলে ফেলিয়ে দিতে সক্ষম হয়। মোটর সাইকেলে থাকা ছিনতাইকারী খাইরুলকে উপস্থিত জনতার সহায়তায় আটক করেন তিনি। রিক্সাযাত্রীর ছিনিয়ে নেওয়া ব্যাগ সহ ল্যাপটপ ও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত মোটর সাইকেল উদ্ধার করেন।
পরবর্তী সময়ে তাকে নিয়ে তার ভাড়া বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে একটি দেশীয় তৈরি একনলা বন্দুকসহ তিন রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খায়রুল জানায়, পনের বৎসর পূর্বে ছিচকে চুরির মাধ্যমে অপরাধ জগতে প্রবেশ করে। সে সময় বায়েজীদ থানা এলাকায় বিভিন্ন ফ্যাক্টরির লোহা, রাস্তায় চলাচল গাড়ীর মালামাল ও বিভিন্ন বাসার জানালা দিয়ে চুরি করিত। একপর্যায়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর পেশাদার ছিনতাইকারী হামকা নূর আলম ও হাতকাটা জাহাঙ্গীর এর হাত ধরে গত ২০১০ সালে ছিনতাই জগতে প্রবেশ করে। এরপর বিভিন্ন সময় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়।
ছিনতাইকারী হামকা নূর আলম ও হাতকাটা জাহাঙ্গীর বর্তমানে কারাগারে থাকায় গ্রেফতারকৃত খায়রুল নিজেই একটি ছিনতাইকারী গ্রুপ তৈরি করে। ছিনতাই কাজে দুইটি মোটরসাইকেল ও দুইটি সিএনজি ব্যবহার করে। আগ্রাবাদ, জিইসি মোড়, রিয়াজউদ্দিন বাজার, তিনপুলের মাথা, মুরাদপুর এলাকায় ব্যাংকিং কর্মকালীন সময়ে অবস্থান করে। বিভিন্ন ব্যাংক বীমা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হতে কোনো ব্যক্তি টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় তাহাদেরকে টার্গেট করে কখনো কৌশলে হাতে থাকা টাকার ব্যাগ টানিয়ে নেয় অথবা সুযোগ বুঝে টাকা বহনকারী ব্যক্তিকে অস্ত্র দ্বারা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে জোর করে সিএনজির ভিতর ঢুকিয়ে টাকা পয়সা কেড়ে নেওয়ার পর সিআরবি, কদমতলী ফ্লাইওভার, দেওয়ানহাট ফ্লাইওভার, নিমতলী বিশ^রোড এলাকা নামিয়ে দেয়।
গ্রেফতারকৃত খায়রুলের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের একাধিক থানায় অস্ত্র, চুরি, ডাকাতি ও দস্যূতার মামলা রয়েছে। তার সহযোগীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রেখেছে গোয়েন্দা পুলিশ।