স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, দেশের শ্রমশক্তির ৮০ ভাগ নারী কর্মী ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে কাজ করে।
তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে হলে নারী উন্নয়নকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে এবং নারীদের উন্নয়নের মূল স্রোতে নিয়ে আসতে হবে।
আজ চট্টগ্রামের রেলওয়ে স্টেডিয়াম পলোগ্রাউন্ডে চিটাগাং মহিলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি-র উদ্যোগে আয়োজিত ১১তম উইমেন্স এসএমই এক্সপো বাংলাদেশ-২০১৭ -এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চিটাগাং মহিলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি-র সভাপতি বেগম মনোয়ারা হাকিম আলী-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দিন।খন্দকার মোশাররফ হোসেন নারীদেরকে স্বাবলম্বী হওয়ার আহবান জানিয়ে আরো বলেন, আপনারা হস্তশিল্প, বুটিক, পোল্ট্রি, গার্মেন্টস ও কৃষিপণ্যের ব্যবসার মাধ্যমে স্বাবলম্বী হতে পারেন। সরকার বিনা জামানতে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ সুবিধা দিচ্ছে। এ ঋণ নিয়ে আপনারা ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে তুলতে পারেন। তথ্য প্রযুক্তির প্রশিক্ষণ নিয়ে ফ্রি-ল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হতে পারেন।
মন্ত্রী বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন উন্নয়নের পূর্বশর্ত। নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করলে দেশের প্রবৃদ্ধি অর্জনে গতি আসবে। নারীদের ক্ষমতায়ন ব্যতীত রূপকল্প-২০২১ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০ বাস্তবায়ন অসম্ভব। বর্তমান সরকার নারীবান্ধব সরকার, নারীদের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে সরকার উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়ন বাড়াতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে।
তিনি বলেন, আমাদের মোট শ্রমশক্তি প্রায় ৬ কোটিরও উপরে- যার এক তৃতীয়াংশ মহিলা। এ বিশাল সংখ্যক কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কাঙ্খিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। সরকার নারীদের ক্ষমতায়ন বৃদ্ধির জন্য অবৈতনিক শিক্ষা, বাল্যবিবাহ রোধ, শিশু ও মাতৃ স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করছে। তিনি বলেন, নারীদের ক্ষমতায়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে অর্থনৈতিক মুক্তি। নারীরা স্বাবলম্বী হলে পরিবার ও সমাজে তাদের প্রভাব ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা বাড়ে।
মন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমানে দেশে ৭০ লক্ষেরও অধিক ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্প প্রতিষ্ঠানে দেশের শ্রমশক্তির ৭০ থেকে ৮০ ভাগ এ খাতে কাজ করে থাকেন। তাদেরকে উন্নয়ন কাজে আর্থিক সহাতায় সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।মন্ত্রী বলেন, জাতীয় শিল্পনীতিতে নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে জোর দেয়া হয়েছে। এসএমই ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকসহ রাষ্ট্রায়াত্ত ও বেসরকারী বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে কাজ করছে। মন্ত্রী সমবায় সমিতি ও একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মাধ্যমে পুঁজি সংগ্রহ করে নারীদের স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য আহবান জানান।
পরে মন্ত্রী ১১ তম আন্তর্জাতিক নারী এস এম ই মেলা – ২০১৭ -এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। মাসব্যাপী এ মেলায় ১৫ টি প্যাভিলিয়েনে দেশী-বিদেশী নারী উদ্যোক্তাদের ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্পে উৎপাদিত পণ্যের ৩০০ টি স্টল রয়েছে। ভারত, পাকিস্তান ও ইরানসহ অন্যান্য দেশের নারী উদ্যোক্তাগণ অংশগ্রহণ করছে।