ধনিয়া বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঔষধি গাছ। বিভিন্ন রোগে এর কার্যকারিতা রয়েছে। এর বৈজ্ঞানিক নাম Coriandrum sativum এবং এটি একবর্ষজীবী উদ্ভিদ। অসাধারণ পুষ্টিগুণে ভরপুর এই পাতা রান্নায় তরকারিতে ব্যবহারের ফলে স্বাদ বেড়ে যায়। বাংলাদেশে সাধারণত সর্ব প্রকার ধনিয়ার বীজ খাবারের মশলা হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে। ওষুধ তৈরি করতে ধনিয়ার বীজ ব্যবহার করা হয়।
আসুন তাহলে জেনে নেই ধনিয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে-
১) হজম বৃদ্ধিঃ ধনিয়া ও তাজা ধনেপাতা হজমের উপকারী। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের গুণ লিভার আর অন্ত্রের কাজ সঠিকভাবে করতে সাহায্য করে। হজমের জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইম ও রস তৈরিতে ধনিয়া কার্যকর।
২) ভিটামিন সি এর উৎসঃ ধনিয়ায় অনেক দরকারি ভিটামিন যেমন ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ ও বিটা ক্যারোটিন আছে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন আমাদের খাবারে যে পরিমাণ ভিটামিন সি থাকা দরকার তার প্রায় ৩০ ভাগই আমরা পেতে পারি ধনেপাতা আর বীজ থেকে।
৩) ডায়াবেটিস প্রতিরোধেঃ ডায়াবেটিস প্রতিরোধে ধনিয়া অনেক উপকারি। ধনিয়া শরীরে ইনসুলিন উৎপাদনে অবদান রেখে রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখে। ধনিয়া রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা এলডিএল-এর পরিমাণ কমায়, উপকারী কোলস্টেরলের বা এইচডিএল-এর পরিমাণ বাড়ায়।
৪) ব্যাকটেরিয়া নিরাময়েঃ ব্যাকটেরিয়ার কারণে কলেরা, টাইফয়েড, ডায়রিয়া ও আমাশয় ইত্যাদি নানান খাদ্যবাহিত ও পানিবাহিত রোগের সংক্রমণ ঘটে। ধনিয়ায় ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধক ক্ষমতা এসব রোগ থেকে আপনাকে সুরক্ষা দেবে।
৫) রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধেঃ ভিটামিন ছাড়াও ধনিয়ায় প্রচুর আয়রন আছে যা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সহায়তা করে। বেশি বেশি আয়রনের জন্যে নারীদের খাদ্য তালিকায় অন্যান্য সুষম খাদ্যের সঙ্গে ধনিয়ার বীজ ও সবুজ পাতা থাকা খুবই দরকারি।
৬) বিষাক্ত ধাতুর ক্রিয়া প্রতিরোধেঃ সীসা, আর্সেনিক, অ্যালুমিনিয়াম, পারদের মত বিষাক্ত ধাতু যদি কোনভাবে মানুষের শরীরে জমে তবে তা নানা রোগ সৃষ্টি করতে পারে। আলঝেইমার, স্মৃতি ও দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, কার্ডিওভাসকুলার ও নিউরনের ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার মত বিভিন্ন মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
৭) জ্বর-সর্দি-কশি কমায়ঃ ধনিয়া বীজে রয়েছে ভিটামিন এ, বিটা ক্যারোটিন, ফলিক এসিড এবং ভিটামিন সি। এই উপাদানগুলির সবক’টিই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ঠাণ্ডা লাগা, সর্দি-কাশি এমনকী জ্বরের প্রকোপ কমাতেও সাহায্য করে।