ডিএমপি নিউজ: ধানমন্ডি এলাকার বিভিন্ন সমস্যা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, যানজট নিয়ন্ত্রণ, বিভিন্ন পয়েন্টে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করতে ধানমন্ডি সোসাইটি ও সুধীজনদের সাথে ডিএমপির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ধানমন্ডি মডেল থানার উদ্যোগে আজ শনিবার দুপুরে থানা কমপ্লেক্সে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন পিপিএম-সেবা। সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম-বার, পিপিএম-বার।
সভায় সংসদ সদস্য চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ধানমন্ডি থানার পুলিশ কাজেকর্মে স্মার্ট। এই স্মার্ট পুলিশের হাত ধরেই স্মার্ট বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এখানে আমি সংসদ সদস্য কয়েক মাস হয়ে গেছে, আজ পর্যন্ত আমাদের এই পুলিশের বিরুদ্ধে একটাও অভিযোগ পাইনি।
তিনি বলেন, এখানে যে সমস্যাগুলোর কথা আসছে সেগুলো আমি অনেক আগেই চিহ্নিত করেছি। আমি সেগুলো নিজের মতো করে সমাধান করার চেষ্টা করছি। কিন্তু এগুলো এককভাবে সমাধান করা সম্ভব নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ধানমন্ডিকে ভবঘুরে ও ভিক্ষুকমুক্ত করার জন্য তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমার শপথ নেওয়ার পরেই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন লেকটাকে সুন্দর করার জন্য, সংস্কার করার জন্য, মানুষের ব্যবহার উপযোগী করার জন্য। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যার এই যে দুটো কথা, আমরা যদি সমাধান করতে পারি তাহলে আমার মনে হয় ধানমন্ডিতে আর তেমন কোন সমস্যা থাকবে না।
তিনি আরো বলেন, ধানমন্ডির মানুষের জীবনকে সুন্দর, স্বাভাবিক ও নিরাপদ করার জন্য, ধানমন্ডির সেই পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার জন্য ধানমন্ডি সোসাইটি নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। আপনাদের সহযোগিতা পেলে ধানমন্ডিকে ১০-১০ করে গড়ে তুলতে পারবো।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ধানমন্ডিতে আমার যে সকল সদস্য কাজ করছে আমি মনে করি তারা অত্যন্ত দক্ষ এবং অত্যন্ত সহানুভূতিশীল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কথা বলেছেন সেখানে চারটি বিষয়ে উল্লেখ আছে। স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট এবং স্মার্ট সোসাইটি। ধানমন্ডিতে বসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ধানমন্ডিতে সর্বপ্রথম ২৩ মার্চ ১৯৭১ সালে নিজ হাতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন আবার এই ধানমন্ডিতেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হয়েছিলেন। আমরা যদি বলি সাহিত্য সংস্কৃতির পিঠস্থান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সোহরাওয়ার্দী ও রমনা পার্ক, এরপরেই রবীন্দ্র স্মরণি এটাও ধানমন্ডিতে। মহিলাদের জন্য একটি ক্রীড়া কমপ্লেক্স সেটিও ধানমন্ডিতে। বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর তারুণ্যের অহংকার শেখ কামাল একটি ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বাংলাদেশের সকল ক্রীড়াক্ষেত্রে ভূমিকা রেখে চলছে আবাহনী ক্লাব- আবাহনী মাঠ সেটিও এখানে। সুতরাং যদি স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট সিটিজেন গড়তে চাই তাহলে আমাদের এখানে যিনি সিনেমার নায়ক থেকে জনগণের নায়কে পরিণত হয়েছেন মাননীয় সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ, তার নেতৃত্বে আপনারা স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সোসাইটি তৈরি করে দেখাবেন এটাই প্রত্যাশা করছি। আপনারা সেই কার্যক্রমে আমরা সব সময় আপনাদের পাশে আছি, পাশে থাকবো।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজারবাগ থেকে রক্ত দিয়ে সর্বপ্রথম মুক্তিযুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করেছিলেন পুলিশ সদস্যরা। যে কোনো দুর্যোগে বাংলাদেশ পুলিশ সবার আগে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এই যে এখন তাপ প্রবাহ চলছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে ৫০টি থানায় বিভিন্ন বাজার, বাস স্টপেজ, মার্কেটসহ জনবহুল স্থানগুলোতে শ্রমজীবী মানুষের জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ করা হয়েছে। ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় স্থায়ীভাবে ট্রেইলার ও ভ্রাম্যমাণ গাড়ির মাধ্যমে পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় বোতলে পানি ও স্যালাইন সরবরাহ করা হচ্ছে।
এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে, তাঁর দর্শন ছড়িয়ে দিতে সুধীজনদের নিয়ে ধানমন্ডি মডেল থানায় একটি মুজিব কর্ণার উদ্বোধন করেন রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন পিপিএম-সেবা।
সভায় ধানমন্ডি সোসাইটির সদস্য ও সুধীজনসহ ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।