বছর কয়েক আগেও যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র আইন প্রণয়নের পক্ষের হার ছিল ৬১ শতাংশ। সম্প্রতি ফ্লোরিডার স্কুলে বন্দুক হামলার পর দেশটির জনগণের মধ্যে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা তৈরি হয়েছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের মুক্ত অস্ত্রনীতির কারণে আর রক্তপাত চান না। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের ৬৮ শতাংশ মানুষ এখন নতুন অস্ত্র আইন প্রণয়নের পক্ষে।
সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে জানা যায়, দেশটির নাগরিকদের কাছে ২০০৭ সালে প্রায় ২৭ কোটি আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। দিন দিন এ সংখ্যা আরো বেড়েছে। ২০০১ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত দেশটির শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ মানুষের মৃত্যুর কারণ হিসেবে আগ্নেয়াস্ত্রকে দায়ী করা হয়। হিসেব করলে দেখা যায়, বিভিন্ন জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হামলার চেয়ে এই অস্ত্র উন্মুক্তের কারণেই দেশটিতে বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের পক্ষে দেশের অধিকাংশ মানুষ একমত হলেও এ ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি হয় না। এর প্রধান কারণ যুক্তরাষ্ট্রের ‘গান লবি’। ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন (এনআরএ) যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের অস্ত্র বহনের অধিকারের পক্ষে প্রধান লবিং গ্রুপ।
এনআরএ’র যুক্তি, অস্ত্র হাতে একজন বাজে লোককে ঠেকানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হলো একজন ভালো লোকের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া। ভয়ের কথা হলো, এনআরএ’র এই প্রচারণায় আমেরিকার মানুষ ক্রমেই বিশ্বাস করা শুরু করেছে। নিজের ঘরে অস্ত্র থাকলে নিরাপদ থাকা যায়, তাদের এই যুক্তি সমর্থন করে দেশের অধিকাংশ মানুষ।
কংগ্রেসের বিভিন্ন সদস্যকে প্রভাবিত করার জন্য এরা বছরে প্রায় ২৫ কোটি ডলার খরচ করে থাকে। তবে কেবল রাজনীতিকদের প্রভাবিত করাই মূল নয়, এই সংস্থার সঙ্গে জড়িত ৫০ লাখ সদস্যও অস্ত্র আইন পরিবর্তন না করার পেছনে অন্যতম নিয়ামক। ২০১৬ সালের নির্বাচনে আগ্নেয়াস্ত্রের পক্ষে, এমন প্রার্থীদের পক্ষে তারা সরাসরি খরচ করেছে ৫ কোটি ২০ লাখ ডলার।