সেই ছোটবেলায় বিজ্ঞান বইয়ে মাধ্যাকর্ষ আবিষ্কারের এই গল্প পড়ার সময় নিশ্চয় অনেকের মনে সেই আপেল গাছটি নিয়ে কৌতুহল জাগে। মজার ব্যাপার হলো, সেই আপেল গাছটি এখনো দাঁড়িয়ে আছে যুক্তরাজ্যে নিউটনের লিংকনশায়ারের বাড়িতে।
বিশ্ববিখ্যাত পদার্থবিদ আইজ্যাক নিউটন মাধ্যাকর্ষ সূত্র আবিষ্কার করেন। তিনি তার বাড়ির আঙিনার একটি আপেল গাছের নিচে বসে ছিলেন। এসময় সেই গাছ থেকে একটি আপেল পড়ে তার মাথায়। আপেল কেন উপরে কিংবা আশেপাশের দিকে না গিয়ে সোজা নিচের দিকে এল, এই চিন্তা করতে করতে তিনি মাধ্যাকর্ষের ধারণা পেয়ে যান।
নিউটনের মাথায় আপেল পড়ার ঘটনা লিপিবদ্ধ আছে অষ্টাদশ শতাব্দির একটি পান্ডুলিপিতে, যেটির লেখক উইলিয়াম স্টুকিল। তিনি নিউটনের বন্ধু। ওই পান্ডুলিপিতে তিনি লিখেছেন, নিউটন আমাকে বলেছিলেন আপেল গাছটির নিচে তিনি গভীর চিন্তামগ্ন ছিলেন। এসময় আপেলটি মাথার উপর পড়ার কারণেই তিনি বিষয়টি নিয়ে ভাবতে বসেছিলেন। এই ভাবনা থেকে বের হয়ে আসে আজকের মাধ্যাকর্ষ সূত্র। নিউটন এই গল্প তার ছাত্রদেরও বলতেন।
স্টুকিল ওই পান্ডুলিপিতে লিখেছেন, নিউটন এবং তিনি এই আপেল গাছটার নিচে বসে একদিন চা খাচ্ছিলেন। এমন সময় নিউটন তাকে বলেন—তুমি কি জানো আমি যুবক বয়সে এই গাছের নিচে বসা অবস্থায় মাধ্যাকর্ষের ধারণা পেয়েছিলাম? আমি তখন কথাটি রসিকতা মনে করে বলেছিলাম, ওহ্ তাই? কিন্তু পরে কথাটি নিউটন যখন তার ছাত্রদেরও একাধিকবার বলেছেন তখন বুঝতে পারি সেটি রসিকতা ছিল না।ন্যাশনাল জিওগ্রাফির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
নিউটনের মাথায় আপেল পড়ার গল্পটি নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। ব্রিটেনের রয়্যাল সায়েন্স লাইব্রেরিয়ান কেইথ মুর একটি গ্রন্থে লিখেছেন, নিউটনের আপেলের গল্পটা হয়তো সঠিক। তবে সেটি তার মাথায় পড়েছিল নাকি সামনে পড়েছিল সেটা একটা প্রশ্ন। একটা বড়সড় আপেল লম্বা গাছের ওপর থেকে কারো মাথায় পড়লে তো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যাবার কথা। আঘাত গুরুতর হতেও পারে। ওই অবস্থায় কারো বিজ্ঞানের সূত্র মাথায় আসে না। তবে যত বিতর্কই হোক না কেন, নিউটনের বাড়ির আপেল গাছটি অনেকের কাছে দর্শনীয় বস্তু।