জার্মানির মিউনিখে যে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্মেলন চলছে সেখানে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স আশ্বাস দিয়েছেন যে নেটো প্রতিরক্ষা জোটের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অব্যাহত থাকবে। তবে তিনি একই সঙ্গে একথাও বলেছেন যে ইউরোপীয় দেশগুলোকে আরও বেশি করে নেটোর সামরিক ব্যয়ের ভার বইতে হবে।
এর আগে একই সম্মেলনে জার্মানির চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মের্কেল নিরাপত্তা ও শরণার্থী সংকটের মত সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ওপর জোর দেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্র কোন পথে যাবে তা নিয়ে চরম বিভ্রান্তিতে আছে নেটোর ইউরোপীয় মিত্ররা।
মিউনিখের এই নিরাপত্তা সম্মেলনে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স তাদের পররাষ্ট্র নীতি সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিয়েছেন তার ভাষণে।
তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনো শক্তভাবে নেটো জোটের পক্ষে এবং আটলান্টিকের দুই তীরের এই জোটের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ যে একই মূল্যবোধ ধারণ করে সেটাও তিনি উল্লেখ করেছেন। কিন্তু একই সঙ্গে তিনি আবার ইউরোপের দেশগুলোকে এটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন যে নেটো জোটের জন্য তাদের ব্যয় আরও বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, নেটোর সদস্য দেশগুলো তাদের জিডিপির দুই শতাংশ প্রতিরক্ষায় ব্যয় করবে বলে অঙ্গীকারবদ্ধ। অথচ মাত্র চারটি দেশ সেই অঙ্গীকার রক্ষ করেছে।
” ইউরোপের মিত্র দেশগুলোকে তাদের অঙ্গীকার রাখতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট চান, তারা যেন তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ান। নেটোর দায়িত্ব সবাইকে ভাগাভাগি করে নিতে হবে।”
তবে এই নিরাপত্তা সম্মেলনে জার্মান চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মেরকেলের কথায় ছিল ভিন্ন সুর। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সব জায়গা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে গুটিয়ে নিয়ে যে একলা চলো নীতির কথা বলছেন, এঙ্গেলা মেরকেল তার বিপরীতে জোর দিয়েছেন আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ওপর।
তিনি বলেছেন, নিরাপত্তা, ইসলামী সন্ত্রাসবাদের মোকাবেলা, বিশ্বায়ন আর শরণার্থী সংকটের মতো সমস্যার মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার কোন বিকল্প নেই।
এঙ্গেলা মেরকেল বলেন, আমরা এখন এমন এক বিশ্বে বাস করছি, যেখানে কোন সুনির্দিষ্ট আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। আর স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরও রাশিয়ার সঙ্গে ইউরোপীয় দেশগুলোর যে ধরণের সম্পর্ক হওয়া উচিত ছিল তা হয়নি।
”বিশ্ব আজ যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে, তা এককভাবে কোন দেশের পক্ষে মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। এর সমাধান হতে পারে বহুপক্ষীয় কাঠামোর মাধ্যমে।”
এঙ্গেলা মেরকেল বলেন এটা হতে পারে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, নেটো এবং জাতিসংঘের মতো বহুপক্ষীয় কাঠামোগুলোকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে।
সূত্র – বিবিসি