লোকের বাড়িতে বাসন মাজা, কাপড় কাচার কাজ করেই দিন চলত পূর্ণিমা পাল দাসের। স্বামী সব্জি বিক্রেতা। রোজগার টেনেটুনে মাসে হাজার দুয়েক। তাই দিয়েই কোনও রকমে সংসার চলত।তবে, এ বার আশার আলো দেখছেন পূর্ণিমা। পরিচারিকার কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। অটো চালাবেন। রোজগার বাড়বে। সচ্ছল হবে সংসার। শুধু পূর্ণিমাই নন, তাঁর মতো অসমের আরও ১২ জনের জীবন বদলে দিতে চলেছে গোলাপি অটো। কারণ, বুধবার থেকে ‘গোলাপি বিপ্লবে’র আঁচ লেগেছে অসমেও।
অসমের বঙ্গাইগাঁওয়ে দেখা মিলবে গোলাপি অটোর। শুধু রঙেই নয়, বদল ঘটেছে চালক এবং সওয়ারিরও। পুরুষ ড্রাইভারের বদলে গোলাপি অটো চালাবেন কেবলমাত্র মহিলারাই। তাতে সওয়ারও হবেন কেবলমাত্র শিশু ও মহিলারা।
অসমের আগে গোলাপি অটো রিকশার চাকা ঘুরেছে দিল্লি, সুরাত, মুম্বই, ঝাড়খণ্ড এবং ওডিশার রাস্তায়। তবে গত কাল বুধবার আনুষ্ঠানিক ভাবে বঙ্গাইগাঁওতে এই পরিষেবা চালু হল। ন্যাশনাল আর্বান লাইভিহুড মিশনের অধীন সিটি মিশন ম্যানেজমেন্ট ইউনিট (সিএমএমইউ) এই পরিষেবা চালু করল শহরে।
আপাতত ১৩ জন মহিলা চালক। পরিষেবা চালুর আগে থেকে কড়া অনুশীলনে দেখা গিয়েছে তাঁদের। প্রতি দিন ঘণ্টা দুয়েক করে চলত ট্রেনিং। পরে অবশ্য তা বেড়ে দাঁড়ায় চার ঘণ্টা। পূর্ণিমা বলেন, “প্রথম প্রথম বেশ ভয় লাগত। তবে এখন অটো চালানোটা বেশ সোজা মনে হয়।”
সিএমএমইউ-এর আধিকারিক কুসুমবর চৌধুরী জানিয়েছেন, আপাতত সকাল থেকে সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত এই গোলাপি অটো চলবে। এই উদ্যোগে সমর্থন মিলেছে বঙ্গাইগাঁও অটো ইউনিয়নের। কুসুমবর জানিয়েছে, এই চালকদের জন্য থাকছে একটি হেল্পলাইন নম্বরও। যাতে আপদেবিপদে পুলিশ ও অ্যাম্বুল্যান্সের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়। কুসুমবরের দাবি, “অটো চালিয়ে মাসে অন্তত ১০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন এই মহিলারা।”