ডিএমপি নিউজঃ নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং ঈদের অনাবিল আনন্দ ও শান্তি অটুট রাখতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সম্মানিত নগরবাসীর আন্তরিক সহযোগিতায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফলপ্রসূ ব্যবস্থা গ্রহণ করার ফলে ঢাকা মহানগরীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি নিরাপদ এবং চমৎকার পরিবেশে নাগরিকগণ ঈদ-ইল-ফিতর উদযাপন উপলক্ষে কেনা কাটা করতে সক্ষম হচ্ছেন। আসন্ন ঈদে নগরীর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে ডিএমপি’র গৃহীত নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত পদক্ষেপ্সমূহ নিম্মরুপঃ
ঢাকা মহানগরী এলাকার নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ফোর্স মোতায়েনঃ
পবিত্র মাহে রমজান ও ঈদ উল ফিতর/২০১৭ উপলক্ষ্যে ঢাকা মহানগরী এলাকার অপরাধ বিভাগসমুহে নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিভাগওয়ারী ফোর্স বন্টন করাসহ নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রণয়ন, মোটর সাইকেল মোবাইল ও চেকপোস্ট ব্যবস্থা জোরদার করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। প্রত্যেক বিভাগে বরাদ্দকৃত ফোর্স সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনারগণ ০২ পালা অথবা ০৩ পালায় ফোর্স মোতায়েন করছেন। এ সংক্রান্তে প্রত্যেক বিভাগ তাদের নিজস্ব প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী বরাদ্দকৃত ফোর্স কাজে লাগানো হচ্ছে। ফোর্স মাহে রমজান উপলক্ষে বিভিন্ন মার্কেট/শপিং মলের ডিউটি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় আইন-শৃঙ্খলা ডিউটিতে মোতায়েন করা হচ্ছে। তেজগাঁও, গুলশান ও উত্তরা এলাকায় মোতায়েনকৃত এপিবিএন-এর সাথে সমন্বয় পূর্বক ফোর্স মোতায়েন পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রতিটি অপরাধ বিভাগে নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রণয়ন করে নিজস্ব উৎস (থানা/ ফাঁড়ী) এবং বরাদ্দকৃত ফোর্সের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। রমজান উপলক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় চেকপোস্টসহ আধুনিক নিরাপত্তা যন্ত্রপাতির ব্যবহার করে নিরাপত্তা বেষ্টনী বৃদ্ধি করা হয়েছে।
ইফতার হতে তারাবীর নামাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অতিরিক্ত সর্তকতা অবলম্বন করাঃ
পবিত্র মাহে রমজান ও ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে নানাবিধ ব্যবসায়িক কর্মকান্ডসহ আর্থিক লেনদেন বৃদ্ধি পায়। এই সময়টিতে সাধারণত চুরি, ছিনতাই, দস্যুতা, ডাকাতিসহ অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টির, অপতৎপরতা বৃদ্ধি পায়। সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও পেশাদারিত্বের সাথে পবিত্র রমজান ও ঈদ-উল-ফিতর-এ ছিনতাই, রাহাজানি ও দস্যুতা রোধকল্পে এ সকল অপতৎপরতার বিরুদ্ধে কার্যক্রম গ্রহণ করে শান্তিপূর্ণভাবে মাহে রমজান ও ঈদ-উল-ফিতর উদযাপনের লক্ষ্যে প্রতিটি অপরাধ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনারগণ স্ব-স্ব এলাকায় নিজস্ব নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন এবং অধীনস্থদের কার্যক্রম নিবিড়ভাবে তদারকির ব্যবস্থা নিয়েছেন।
প্রতিটি থানা এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আকস্মিক (দিন/রাত যেকোন সময়) চেকপোস্ট স্থাপন করে সন্দেহজনক মোটর সাইকেল, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকারসহ অন্যান্য যানবাহন এবং ব্যক্তিকে চেকিং এর আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। অপরাধ বিভাগের ডিসি এবং এডিসিগণ স্ব-স্ব বিভাগে সময় এবং স্থান নির্ধারণ পূর্বক কার্যকর চেকপোস্ট কার্যক্রম পরিচালনাসহ ব্যক্তিগতভাবে উক্ত কাযক্রম তদারকি করছেন। বিভিন্ন অপরাধ বিভাগের বরাদ্দকৃত পিওএম/এএসএফ ফোর্স, থানা/ফাঁড়ির পুলিশ সদস্য, ব্যাটালিয়ান আনসার এবং অঙ্গীভূত আনসারের সমন্বয়ে চেকপোস্ট কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। অপরাধ বিভাগের ডিসি, এডিস ও এডিসি ও এসিগণ পালাক্রমে বিভিন্ন টহল রণ পাহারা, মোটরসাইকেল মোবাইলসহ নানবিধ ডিউটি কার্যক্রমের সার্বক্ষণিক তদারকি নিশ্চিত করছেন। থানার অফিসার ইনচার্জগণ/ইন্সপেক্টর (তদন্ত) দিবারাত্র ২৪ ঘন্টা থানা এলাকায় অবস্থান করে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরি ভূমিকা পালন করছেন। সকল ধরণের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উপর সর্তক দৃষ্টি রাখা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের ভিতরে ও বাহিরে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ব্যাংকের বিভিন্ন শাখাসমূহের বাইরে অপ্রয়োজনে অপেক্ষমান লোকজন এবং মোটরসাইকেল আরোহীদের বিনা কারণে অবস্থান নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। ব্যাংকের আশেপাশে কোন ধরণের পান/সিগারেটের দোকান, হকার ইত্যাদি কোনভাবেই বসতে দেয়া হচ্ছে না।
থানাসমূহের কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়ন এবং মোবাইল প্যাট্রোলসমূহের কার্যকারিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সেহরির আগে ও পরে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা কর্তৃক আকস্মিক থানা পরিদর্শন এবং থানা এলাকায় ডিউটি তদারকি করা হচ্ছে। ইফতারের সময় হতে তারাবীর নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত সকল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ইন্সপেক্টর (তদন্ত/অপারেশনস্), সংশ্লিষ্ট জোনাল এসি/এডিসি স্বশরীরে বর্ণিত সময়ে নিজ নিজ কর্মস্থলে উপস্থিত থাকছেন এবং থানা পর্যায়ে সকল পুলিশী টহল, ফুট প্যাট্রোল, চেকপোষ্ট ব্যবস্থা কার্যকর রাখছেন। সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনারগণ ব্যক্তিগতভাবে এ সকল কার্যক্রম তদারকি করছেন। কোন অবস্থাতেই যেন জনসাধরণ অহেতুক হয়রানির স্বীকার না হয় যে বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হয়েছে।
পিক-আওয়ারে আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনাঃ
অপরাধ বিভাগে (১৯.০০-২২.০০ঘটিকা) পর্যন্ত পিক-আওয়ার হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনা জোরদার করা হয়েছে।
যেকোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সদস্যরা নিবেদিতভাবে সর্বক্ষণ কাজ করে যাচ্ছে। নগরবাসীর সহায়তায় একটি উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে ঈদ উদযাপনের বিষয়ে পুলিশ সদা সচেষ্ট।