তুরস্কের অ্যাটলাস গ্লোবাল বিমানটি ১২৭ জন আরোহী নিয়ে সাইপ্রাসের উদ্দেশে উড্ডয়ন করে। কিন্তু মিনিট দশেকের মধ্যেই যাত্রীদের থরথর করে বুক কাঁপছে। ‘বাঁচবো তো? নাকি একটু পরেই ঢলে পড়তে হবে মৃত্যুর কোলে!’ তবে শেষ পর্যন্ত পাইলটের দক্ষতার গুণে নিরাপদেই অবতরণ করেছিল তুরস্কের বেসরকারি সংস্থার বিমানটি।
তাই মাটিতে নেমেই দ্বিতীয় জন্ম উৎসব পালন করেছেন আনন্দে আত্মহারা বিমানের যাত্রী ও ক্রুরা। গত বৃহস্পতিবার তুরস্ক থেকে সাইপ্রাসের উদ্দেশে ১২১ জন যাত্রী ও ৬ ক্রুকে নিয়ে উড্ডয়ন করে অ্যাটলাস গ্লোবালের একটি বিমান। উড্ডয়নের ১০ মিনিটের মাথায় ভূমি থেকে ১৩০০ মিটার উচ্চতায় ওঠার পর প্রচণ্ড ঝড়ের কবলে পড়ে বিমানটি। শিলার আঘাতে এক পর্যায়ে বিমানটির ককপিটের গ্লাসে চিড় ধরে। এতে পাইলটের পক্ষে সামনের দিকে তাকিয়ে বিমান চালনা মুশকিল হয়ে পড়ছিল।
ঝড়ের কারণে তুরস্কের কামাল আতাতুর্ক বিমানবন্দরে থাকা কয়েকটি বিমানের যাত্রা বাতিল করা হয় এবং বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
অবস্থা বেগতিক দেখে বিমানের পাইলট আতাতুর্ক বিমানবন্দরে অবতরণের অনুমতি চান। ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেয়। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ততক্ষণে অ্যাম্বুলেন্স ও অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি হাজির করে রেখেছে।
বিমানটি যখন অবতরণ করছিল তখন এটি প্রচণ্ডভাবে কাঁপছিল। যাত্রীরা তাদের প্রাণের আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, লাল নেইলপলিশ পরিহিত এক নারী তার আসন খাঁমচে ধরেছেন আতঙ্কে। আরেক যাত্রীকে বলতে শোনা গেছে, ‘উনি (পাইলট) পারবেন তো?’
শেষ পর্যন্ত পাইলট পেরেছেন এবং দক্ষতার সঙ্গেই বিমানটিকে তিনি অবতরণ করাতে সক্ষম হয়েছেন, যদিও এ সময় ১০ জন আহত হয়েছে।
এ ঘটনার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেত্রো পেরেশোঙ্কো ওই পাইলটকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। অসীম সাহসিকতাপূর্ণ এই কাজের জন্য তাকে ‘ইউক্রেনিয়ান অর্ডার অব কারেজ’ পদক দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
ইউক্রেনের নাগরিক ক্যাপেন্ট অ্যাপকভ বলেছেন, ‘আমি ৩০ বছর ধরে বিমান চালাই। আপনারা কি বিমানের অবতরণ দেখেছেন? যাত্রীরা সবাই জীবিত। এটা স্বাভাবিক। এটা আমাদের পেশাগত আস্থা। ’
বিমানের এই বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে পড়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমাদের নির্দেশক আবহাওয়ার বিপর্যয়ের খবর দেখেননি। আর এ কারণেই এই পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। তবে আসল কথা হচ্ছে যাত্রীরা জীবিত আছে। ’