উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন বলেছেন, পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের সুইচ সব সময়ের জন্যই তাঁর টেবিলে থাকে। ফলে ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কখনোই যুদ্ধ শুরুর সুযোগ পাবে না’।নতুন বছরে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সরকারি টেলিভিশনে দেওয়া এক বক্তব্যে কিম জং-উন বলেন, গোটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের আওতার মধ্যে।
‘এটা কোনো হুমকি নয়, এটা একটা বাস্তবতা।’এ সময় উত্তর কোরিয়ার নেতা প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি শান্তির বার্তা দেন এবং ‘আলোচনার দরজা খোলা’ বলে উল্লেখ করেন।কিম জং-উন বলেন, খুব সম্ভবত সিউলে অনুষ্ঠিতব্য অলিম্পিকে উত্তর কোরিয়া দল পাঠাবে।
একের পর এক পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের মহড়া চালানোর ঘটনায় দীর্ঘদিন ধরে উত্তর পিয়ংইয়ং ও হোয়াইট হাউসের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। সর্বশেষ ১৫ সেপ্টেম্বর ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া।
চলতি বছরে পঞ্চম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ছিল সেটি। এ ছাড়া সেপ্টেম্বরের শুরুতে ষষ্ঠবারের মতো পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় দেশটি। সর্বশেষ অক্টোবরে হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা চালানো হয়।
পারমাণবিক কর্মসূচি অব্যাহত রাখায় গত ২২ ডিসেম্বর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ নতুন করে আরো কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে উত্তর কোরিয়ার ওপর। নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলো সর্বসম্মতিক্রমে ওই প্রস্তাব পাস করেছে।
নিষেধাজ্ঞায় উত্তর কোরিয়ার পেট্রোলিয়াম আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর কোরিয়ার যেসব নাগরিক বিদেশে কাজ করেন, তাঁদেরও ফেরানোর কথা বলা হয়েছে। জাতিসংঘের নতুন এই নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরিভাবে উত্তর কোরিয়ার ওপর অর্থনৈতিক অবরোধের আরোপের শামিল বলে মন্তব্য করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এর মধ্যেই বছরের শেষ দিনে টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যে কিম জং-উন উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচি আরো জোরদার করার ঘোষণা দিলেও প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি সুর বেশ নরমই রেখেছেন।যদিও কিম জং-উন বলেছেন, দেশ দুটি এখনো ‘টেকনিক্যালি যুদ্ধের’ মধ্যেই আছে। তবু আসছে নতুন বছরে এটা সহজতর হতে পারে।
উত্তর কোরীয় নেতা বলেন, ‘২০১৮ সাল উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এ বছরই উত্তর কোরিয়া তার প্রতিষ্ঠার ৭০ বছর উদযাপন করবে আর অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় শীতকালীন অলিম্পিক শুরু হবে।’
আন্তঃদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল উৎক্ষেপণের পর গত এক বছর দুই দেশের মধ্যে যে চরম রাজনৈতিক উত্তেজনা চলছিল, কিম জং-উনের এ বক্তব্য সেই ধারাবাহিকতার ব্যতিক্রম বলে বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার নেতা সিউলের ফেব্রুয়ারির অলিম্পিক নিয়ে বলেন, উত্তর কোরিয়ার জনগণের ঐক্যবদ্ধস্বরূপ তুলে ধরতেই পিয়ংইয়ং সিউল অলিম্পিকে অংশ নেবে। অলিম্পিকের সাফল্যও কামনা করেন তিনি।