ডিএমপি নিউজ: বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) উদ্যোগে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচির প্রথম কোর্স শেষ হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত, নিরাপদ ও কার্যকর এইচপিভি টিকা দেওয়ার এ কার্যক্রম ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর প্রথম ডোজ দেওয়ার মাধ্যমে শুরু হয়। এরপর দ্বিতীয় ডোজ ৫ ডিসেম্বর ও তৃতীয় ডোজ ৬ মে দেওয়া হয়। এই কর্মসূচির আওতায় এখন পর্যন্ত ৬৫ জন পুনাক সদস্যদকে এইচপিভি টিকা দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচির প্রথম কোর্সের সমাপনী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুনাক সভানেত্রী ডা. তৈয়বা মুসাররাত জাঁহা চৌধুরী।
এ সময় পুনাকের সাধারণ সম্পাদিকা নাসিম আমিন, সহ-সভানেত্রী আফরোজা পারভীন, সহ-সভানেত্রী প্রথমা রহমান সিদ্দিকী ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদিকা ডা. ফাতেমা জেসমিনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের (সিপিএইচ) পরিচালক (ডিআইজি) শেখ মোঃ রেজাউল হায়দার পিপিএম (বার), সিপিএইচের তত্ত্বাবধায়ক ও সিনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) ডাঃ মুঃ মনোয়ার হাসানাত খান, সিপিএইচের পুলিশ সুপারগণ ও ডাক্তারগণ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে পুনাক সভানেত্রী ডা. তৈয়বা মুসাররাত জাঁহা চৌধুরী বলেন, আমাদের এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচিতে অনেকে অংশগ্রহণ করেছেন। এ জন্য আমরা প্রত্যেকটি জেলায় পুনাকের মাধ্যমে ভ্যাকসিন দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছি। ভ্যাকসিনের বিষয়ে জানা না থাকায় কিছু নারী টিকা গ্রহণ কর্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। পুলিশ পরিবারের সকল নারীকে এই টিকা গ্রহণে সচেতন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, টিকা প্রদান করার পরও সব সময় স্বাস্থ্যের বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রায়ই দেখা যায় শিশুদের বয়স কম হলেও অস্বাভাবিক ওজন বা বিভিন্ন ধরণের রোগে আক্রান্ত থাকে। এর কারণ ফাস্ট ফুডসহ বিভিন্ন অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ। খাবারের বিষয়ে বাবা-মাকে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, মেয়েরা যখন কোন শারীরিক সমস্যায় ভুগেন তখন সে তার মায়ের কাছেই ওই সমস্যার কথাটি বলে থাকেন। তাই মাকেই তার মেয়ের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি সজাগ থাকতে হবে। আমাদের সকলকেই একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, সুস্থ ভাবে বাঁচতে হলে ব্যালেন্স ডায়েটের পাশাপাশি নিয়মিত শরীর চর্চার কোন বিকল্প নেই। শুধু লাইফ স্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমেই আমরা সুস্থ থাকতে পারি। লাইফ স্টাইল সম্পর্কেও আমাদেরকে সচেতন হতে হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ক্যান্সার আক্রান্ত নারীদের মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে। ২০১৮ সালের ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার এর তথ্য মতে, বাংলাদেশের প্রতি বছর ১২ হাজারের বেশি নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং প্রায় সাড়ে ৬ হাজার নারী মারা যান; অথচ, জরায়ু মুখে ক্যান্সার প্রতিরোধ ও নিরাময়যোগ্য।