টাকার বিনিময়ে শিক্ষকরা পরীক্ষার হলে উত্তর বলে দিচ্ছেন- এমন অভিযোগ করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, ‘পরীক্ষার দিন সকালে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে। এসব কিছুর সঙ্গে শিক্ষকরা জড়িত। আমরা তাদের বারবার সতর্ক করেছি। এসব বন্ধ না হলে এসব শিক্ষককে রাখা সম্ভব হবে না।’
মন্ত্রী ১৮ মে’১৭ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া-২০১৬ এবং শীতকালীন ক্রীড়া-২০১৭ এর জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন ও রানার আপ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহকে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ এবং জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০১৭ এর সেরা প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সংগঠন প্রধানদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। জাতীয় স্কুল ও মাদরাসা ক্রীড়া সমিতি এ অনুষ্ঠানের অয়োজন করে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক প্রফেসর ড.এসএম ওয়াহিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. আলমগীর, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মাহাবুবুর রহমান এবং মাউশি’র উপ-পরিচালক ফারহানা হক বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ানো, নোট-গাইড বই বিক্রি ও কোচিং করানো হচ্ছে। এই ধরণের অসৎ কাজের সঙ্গে জড়িত শিক্ষকদের কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। তারা এই পথ থেকে সরে না আসলে আমরা ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।’ নোট-গাইড ও কোচিং বাণিজ্য করতে আইন করা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।
এর আগে সকালে অপর এক অনুষ্ঠানে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গবেষণা ও জ্ঞান চর্চা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারুপ করে মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘প্রযুক্তি, জ্ঞান শুধু আমদানি করার মানসিকতা বদলাতে হবে। নিজস্ব সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও তার ব্যবহার করতে হবে। আমরা যাতে জ্ঞান ও প্রযুক্তি রপ্তানি করতে পারি, সেই জায়গায় যেতে হবে।’
তিনি ঢাকায় জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম) অডিটরিয়ামে শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন শিক্ষাখাতে উচ্চতর গবেষণা সহায়তা কর্মসূচি সংক্রান্ত কর্মশালা ও চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, উচ্চতর এবং ফলিত গবেষণার জন্য ২০১০ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত ১১৩টি গবেষণা প্রকল্পে ২১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। চলমান গবেষণা কার্যক্রমের আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৫ কোটি ৩৯ লাখ ৯২ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল্লাহ আল হাসান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন, মাউশি মহাপরিচালক ড. এসএম ওয়াহিদুজ্জামান, নায়েমের মহাপরিচালক অধ্যাপক হামিদুল হক, গবেষণা বাছাই কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর মেসবাউদ্দিন আহম্মেদ এবং ব্যানবেইসের পরিচালক ফসিউল্লাহ বক্তৃতা করেন।
পরে মন্ত্রী ১৬৬টি গবেষণা প্রকল্পের অনুকুলে ১২ কোটি ৬০ লাখ ২২ হাজার টাকার চেক বিতরণ করেন। ১০টি প্রকল্পের ৩য় কিস্তি, ৮০টি প্রকল্পের ২য় কিস্তি এবং ৭৬টি প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়। গবেষণা প্রকল্পের অনুদান, মুখ্য গবেষক ও সহকারি গবেষকের সম্মানী হিসেবে এ চেক দেয়া হয়।
গাণিতিক বিজ্ঞান, জীবন সম্পর্কিত বিজ্ঞান, ভৌত বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, আইসিটি, মেরিন সায়েন্স এবং এসডিজি ও ৭ম পঞ্চবার্য়িক পরিকল্পনার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক গবেষণার জন্য এ অনুদান দেয়া হচ্ছে।